৫০০ টাকায় গরুর মাংস সঙ্গে ১০০ টাকায় তরমুজ!
৫০০ টাকায় গরুর মাংসের সঙ্গে এবার ১০০ টাকায় তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ফরিদপুরে। ৩০ টাকায় মিলছে আনারস। আর স্বল্পমূল্যে এসব পণ্য পেয়ে ক্রেতারাও দারুণ খুশি। আজ শুক্রবার (২২ মার্চ) সকালে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে সস্তায় এই তরমুজ আর আনারস কিনতে উৎসুক জনতার ভিড় জমে যায়। সেখানে পাঁচ কেজি ওজনের বড় তরমুজ ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। আর ছোট থেকে মাঝারি আকারের তরমুজ বিক্রি হয় ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা। এর বাইরে শহরের গুহ লক্ষ্মীপুর ঈদগাহে বিক্রি করা হয় ৫০০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পরিপ্রেক্ষিতে ফরিদপুরে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য এভাবে সস্তায় তরমুজ, আনারস ও গরুর গোস্ত বিক্রি করে ফরিদপুরবাসীর মন জয় করে নেওয়ার কৃতিত্ব ডা. নাহিদ-উল-হক নামে স্থানীয় একজন চিকিৎসকের। হরমোন ও অ্যান্ড্রক্রোলজি বিশেষজ্ঞ এই চিকিৎসক রমজান উপলক্ষে সপ্তাহখানেক আগে থেকেই মাত্র ৫০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রির কর্মসূচি শুরু করেন।
আজ শহরের লক্ষ্মীপুর মহল্লার ঈদগাহে পাঁচটি দেশীয় গরু জবাই করে সেগুলোর গোস্ত বিক্রি করেন নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে। এর পাশাপাশি আজ থেকে সস্তায় তরমুজ ও আনারস বিক্রি শুরু হলো।
ডা. নাহিদ-উল-হক বলেন, ফরিদপুরবাসী তথা সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করার তাগিদ থেকেই থ্রি জেড ক্রিয়েটিভ মিডিয়ার পক্ষ থেকে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রমজানে গরুর গোস্ত ও তরমুজের ব্যাপারে সাধারণ মুসলমানদের মধ্যে আবেদন রয়েছে। কিন্তু উচ্চ মূল্যের কারণে তারা এই তরমুজ কিনে খেতে পারে না। তাদের জন্যই এই উদ্যোগ। এই উদ্যোগ পুরো রমজানে অব্যাহত থাকবে।
থ্রি জেড ক্রিয়েটিভ মিডিয়ার ভলেন্টিয়ার সাগর বলেন, চার থেকে পাঁচ কেজি ওজনের তরমুজ ১০০ টাকায় আর সাত থেকে আট কেজি ওজনের তরমুজ ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সব তরমুজ কেটে ক্রেতাদের দেখিয়ে তার পরই দেওয়া হচ্ছে।
সাধারণ ক্রেতারা বলেন, ‘বাজারে বড় একটি তরমুজ ৫০০ টাকারও বেশি বিক্রি হচ্ছে। সেগুলো এখানে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় পাচ্ছি।’
শেখ আলমগীর নামে এক অটোরিকশাচালক বলেন, ‘এই রোজায় আজই প্রথম তরমুজ কিনলাম। সস্তায় পাইছি তাই কিনতে পারলাম।‘
নিলয় নামে এক ক্রেতা তরমুজের কাটা অংশ দেখিয়ে বলেন, ‘তরমুজের রংটা যেমন ভালো, ঘ্রাণও সুন্দর। দেখেই পছন্দ হইছে।’
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আবুল ফয়েজ শাহনেওয়াজ বলেন, এটি ডা. নাহিদ-উল-হকের একটি মহতী উদ্যোগ। গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে এতে ইফতারে পরিবারের সদস্যদের মুখে একটু তরমুজ তুলে দেওয়ার সৌভাগ্য হলো। এই উদ্যোগ যেন আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। তার দেখাদেখি সামর্থ্যবান অন্যদেরও এভাবে এগিয়ে আসা উচিত।