ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় ঘূর্ণিঝড়ে ২২ গ্রাম লণ্ডভণ্ড
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলায় ঘূর্ণিঝড়ে দুটি ইউনিয়নের অন্তত ২২টি গ্রাম লণ্ডভণ্ড হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এতে শতাধিক বসতঘর বিধ্বস্ত এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুতের তার ছিড়ে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার (২৭ মার্চ) দিনগত রাত একটার দিকে উপজেলার পাচুড়িয়া ও বানা ইউনিয়নের এসব গ্রামে ঘূর্ণিঝড়ের সাথে শিলা বৃষ্টি হয়। এতে অসংখ্য গাছপালা ভেঙে ও উপড়ে পড়েছে। অনেক জায়গায় সড়কের উপরে গাছ পড়ে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে অন্ধকার হয়ে যায় দুটি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম।
বানা ইউনিয়নের কঠুরাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ইমরান হোসেন বলেন, বানা ইউনিয়নের শিরগ্রাম, গড়ানিয়া, পাকুড়িয়া, টাবনী, টোনাপাড়া, শিয়ালদি চরপাড়া, জয়দেবপুর, আউশির হাট, কঠুরাকান্দি, মাঝপাড়া, আড়পাড়াসহ অন্তত ১৪টি গ্রামে ঘূর্ণিঝড় ভয়ঙ্করভাবে আঘাত হানে। ঝড়ে কাঁচা-আধাপাকা ঘরবাড়ি, গাছপালা, পেঁয়াজ, রসুন, মসুরি, ধনিয়া, ধান, গমসহ কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
পাচুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বর) মো. আমিনুর রহমান বলেন, ঝড়ে আমার ঘরবাড়ি, ফসলি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও যুগীবরাট, ভাটপাড়া, চাদড়া, পাঁচুড়িয়া, দেউলি, চরনারানদিয়া, ধুলজুড়ি, চরভাটপাড়াসহ ৮ গ্রামে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এ ব্যাপারে পাচুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমি এই মুহূর্তে ঢাকায় আছি। তবে শুনেছি আমার পাচুড়িয়া ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী বানা ইউনিয়নে ঝড়ে নয়টি গ্রামে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। খোঁজ নিয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত তথ্য জানাতে পারব।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান জাহিদ বলেন, বুধবার রাত একটার দিকে ঘূর্ণিঝড়ে দুই ইউনিয়নের অন্তত ২২টি গ্রামের প্রায় শতাধিক কাঁচাপাকা বাড়িঘর ও কয়েকশ গাছপালা উপড়ে যায়। বিস্তীর্ণ জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে। অনেকেই ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নেন। ঘটনাস্থলে পৌছে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে কাজ শুরু করা হয়েছে।
এ বিষয়ে তথ্য জানতে বানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হারুন অর রশিদ শরীফের মোবাইলফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আলফাডাঙ্গা সাব-জোনাল অফিসের এজিএম ফাহিম হাসান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের ফলে সেখানে কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুতের তাঁর ছিড়ে গেছে, কয়েকটি খুঁটি ভেঙে অনেকগুলো আঁকাবাঁকা হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে কাজ চলছে।
এ ব্যাপারে আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমীন ইয়াসমিনের মোবাইলফোনে একাধিকবার কল করেও পাওয়া যায়নি। তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, ঘটনাস্থলে পৌছে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করতে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বাত্মক সাহায্য সহযোগিতা করা হবে।