ছাত্ররাজনীতি বন্ধ রাখবে কিনা বুয়েট কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে : গয়েশ্বর
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, মেধাবী সন্তানদের লেখাপড়ার স্বার্থে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ রাখবে কিনা এ সিদ্ধান্ত বুয়েট কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।
আজ সোমবার (১ এপ্রিল) সকালে সম্প্রতি নাটোরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেওয়ান শাহীনের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেওয়ার পর উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গয়েশ্বর এ মন্তব্য করেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ছাত্র রাজনীতি চাই তো, আমরাও ছাত্র রাজনীতি করে এই পর্যন্ত এসেছি। ছাত্র রাজনীতি তো বাধা না। একটি শিক্ষাঙ্গনে একদলীয় ছাত্রসংগঠন, তাদের নানা ধরনের নারী ধর্ষণ-নির্যাতন-অত্যাচার, ভিন্ন মতের ছাত্রসংগঠনকে থাকতে না দেওয়া এবং নৃশংসভাবে বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরারকে হত্যা করা হয়। এর প্রতিবাদে শুধু ছাত্ররা না, দেশের সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক দল ফুঁসে উঠে। তখন বুয়েট কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, বুয়েটে কোনো রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন থাকবে না। যার পরিপ্রেক্ষিতে বুয়েট এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা এখনো বলবৎ আছে কিনা, সেই আশঙ্কা আছে কিনা- সার্বিক দিক বিবেচনা করে বুয়েটকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে ছাত্ররাজনীতি থাকবে কিনা। বুয়েট কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে, ক্যাম্পাসের পরিবেশ শান্ত রাখা এবং মা-বাবার মেধাবী সন্তানরা যারা এখানে লেখাপড়া করে তাদের লেখাপড়ার স্বার্থে বুয়েট কর্তৃপক্ষ সেখানে রাজনীতি বিরত রাখবে-এটা তাদের সিদ্ধান্ত।
গয়েশ্বর আরও বলেন, আমি মনে করি, বুয়েটের অবস্থার চেয়েও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা আরো শোচনীয়। সেখানে ধর্ষণের সেঞ্চুরি পালন করেছিল ছাত্রলীগনেতা মানিক। এর চেয়ে ঘৃণিত আর কী হতে পারে? আসলে তারা কোনো কলঙ্কে কলঙ্কিত না! আমরা যতই তাদের কলঙ্কিত মনে করি, তারা ততো অলংকৃত হয়। এর একটি কারণ পেশিশক্তির ব্যবহার এবং প্রশাসনের দলীয় কর্মী হিসেবে রাজনীতি ধ্বংস করা। এখন দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আছে কিনা সন্দেহ আছে। কিছুদিন পরে বোঝা যাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আদৌ আছে কিনা।
নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেওয়ান শাহীনের ওপর হামলার প্রসঙ্গ টেনে উপস্থিত সাংবাদিকদের গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের দ্বারা প্রায়ই আমাদের নেতাকর্মীরা আক্রান্ত হন। সারাদেশে ক্ষমতাসীনদের এ নৃশংসতা চলছে। তারপরও বিএনপি নেতাকর্মীরা মাঠ ছেড়ে যায় না। তবে, এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও পেশিশক্তি ছাড়া জনবিচ্ছিন্ন সরকারের পক্ষে রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকা সম্ভব নয়।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুসংবাদে সারাদেশে কান্নার রোল পড়লেও ক্ষমতাসীনরা খুশি হবে।