ঈদযাত্রায় যাত্রী-চালকদের যে পরামর্শ দিলো পুলিশ
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরে নিরাপদ যাত্রায় নাগরিকদের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। এরমধ্যে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে বের হওয়া, মালবাহী যানবাহনে ভ্রমণ না করা, রাস্তা পারাপারে জেব্রা ক্রসিং ব্যবহারের পরামর্শ রয়েছে।
আজ বুধবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে পুলিশ সদরদপ্তরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের পুলিশ সুপার ইনামুল হক সাগরের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে এ পরামর্শ দেওয়া হয়।
যাত্রীদের প্রতি পরামর্শ
১. পর্যাপ্ত সময় নিয়ে ঈদের ভ্রমণ পরিকল্পনা করা। ভ্রমণকালে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় রাখা।
২. চালককে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালাতে তাগিদ না দেওয়া। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে বাসের ছাদে কিংবা ট্রাক, পিকআপ ও অন্যান্য পণ্যবাহী যানবাহনে ভ্রমণ না করা।
৩. রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে জেব্রা ক্রসিং অথবা ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করা। যেখানে জেব্রা ক্রসিং বা ফুট ওভারব্রিজ নেই সেখানে যানবাহনের গতিবিধি দেখে নিরাপদে রাস্তা পার হওয়া। প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নেওয়া।
৪. ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বেপরোয়া গতিতে রাইডিং না করা।
৫. অপরিচিত কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে খাবার না খাওয়া।
বাসমালিকদের প্রতি পরামর্শ
১. অদক্ষ, অপেশাদার, ক্লান্ত বা অসুস্থ চালককে যাত্রীবাহী বাস ও গাড়ি চালাতে না দেওয়া।
২. চালক যাতে নিয়ম মেনে গাড়ি চালায় এবং ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং না করে সেজন্য চালককে নির্দেশ দেওয়া।
৩. বাসে অতিরিক্ত যাত্রী ওঠানো যাবে না।
৪. ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় বের করা যাবে না।
বাসচালকদের প্রতি পরামর্শ
১. ওভার স্পিডে গাড়ি না চালানো, ঝুঁকিপূর্ণ ওভার টেকিং না করা।
২. ক্লান্তি বা অবসাদ বা অসুস্থ অবস্থায় গাড়ি না চালানো।
৩. ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সবসময় সঙ্গে রাখা।
৪. আঞ্চলিক সড়ক, মহাসড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে পুলিশের নির্দেশনা মেনে চলা।
লঞ্চ-স্টিমার-স্পিডবোটের যাত্রীদের প্রতি পরামর্শ
১. জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে নৌযানে না ওঠা।
২. নৌযানের ছাদে যাত্রী হয়ে ভ্রমণ না করা।
৩. দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌযানে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকা।
৪. যাত্রাপথে ঝড় দেখা দিলে এদিক ওদিক ছোটাছুটি না করে নিজের জায়গায় অবস্থান করতে হবে। স্পিডবোটে ভ্রমণের ক্ষেত্রে লাইফ জ্যাকেট পরিধান করা।
লঞ্চ-স্টিমার-স্পিডবোট মালিকদের প্রতি পরামর্শ
১. নির্ধারিত সংখ্যক ও নির্ধারিত গ্রেডের মাস্টার ও ড্রাইভার দিয়ে নৌযান পরিচালনা করা।
২. দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় নৌযানের চলাচল বন্ধ রাখা।
৩. নৌযানের মাস্টার ব্রিজে যাত্রী সাধারণের অবাধ চলাচল বন্ধ করার জন্য দু’পাশ অস্থায়ীভাবে বন্ধ করার ব্যবস্থা করা। লঞ্চে পর্যাপ্ত বয়া রাখা।
লঞ্চ-স্টিমার-স্পিডবোট চালকদের প্রতি পরামর্শ
১. আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে নৌযান নিয়ে বন্দর ত্যাগ করা।
২. ডেকের ওপর যাত্রীদের বসার স্থানে মালামাল পরিবহণ থেকে বিরত থাকা।
৩. পর্যাপ্ত সংখ্যক বয়া-লাইফ জ্যাকেট নৌযানে রাখা।
৪. যাত্রাপথে ঝড়ের আশঙ্কা দেখা দিলে নৌযানকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া বা তীরে ভিড়িয়ে রাখা।
৫. নৌযানে মোবাইলফোন ও রেডিও রাখা এবং নিয়মিত আবহাওয়ার বুলেটিন শোনা। প্রয়োজনে আবহাওয়া সংক্রান্ত অ্যাপ ব্যবহার করা।
৬. বৈধ কাগজপত্রবিহীন নৌযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকা।
নৌপথে সাধারণ পরামর্শ
সব ফায়ার পাম্প ও অগ্নিনিরোধক যন্ত্রপাতির সঠিকতা নিশ্চিত করা। দুর্ঘটনাকবলিত নৌযান শনাক্তকরণের লক্ষ্যে নৌযানগুলোতে ১০০ থেকে ১৫০ ফুট লম্বা দড়ি সম্বলিত বয়া এবং লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা রাখা।
ট্রেন যাত্রীদের প্রতি অনুরোধ
১. ট্রেনের ছাদে, বাফারে, পাদানিতে ও ইঞ্জিনে ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ থেকে বিরত থাকা।
২. ট্রেনে ভ্রমণের সময় পাথর নিক্ষেপ সম্পর্কে সতর্ক থাকা।
৩. ট্রেনে ভ্রমণের সময় মালামাল নিজ দায়িত্বে রাখা। বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকা।
গুজবে কান না দিয়ে সত্যতা যাচাইয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর সহায়তা নেওয়ার অনুরোধ করেছে পুলিশ। এ ছাড়া জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯-এ কল করতে পারেন।
প্রয়োজনে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের কন্ট্রোল রুমে ০১৩২০০০১২৯৯, হাইওয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ০১৩২০১৮২৫৯৮, রেলওয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ০১৩২০১৭৭৫৯৮, নৌপুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ০১৩২০১৬৯৫৯৮, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ০১৭৭৭৭২০১৯৯ নম্বরে এবং জেলা পুলিশ সুপার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।