কেএনএফ সন্ত্রাসীদের শান্তির পথে ফেরার পথ খোলা : র্যাব মহাপরিচালক
র্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে কোনো অবৈধ অস্ত্রধারীদের থাকতে দেওয়া হবে না। আমরা অভিযান শুরু করেছি, পর্যায়ক্রমে অভিযানের মাত্রা বাড়তে থাকবে। সরকার শান্তি চায়, অশান্তি চায় না। তাই কেএনএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের শান্তির পথে ফেরার পথ আজও খোলা আছে, ভুল স্বীকার করে শান্তির পথে ফিরলে তাদের পুনর্বাসনসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’
আজ বুধবার (১৭ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টায় বান্দরবানের রুমা-থানচিতে কেএনএফের তাণ্ডব এলাকা পরিদর্শন শেষে বান্দরবান সার্কিট হাউসে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মহাপরিচালক এ কথা বলেন।
র্যাব প্রধান সকালে হেলিকপ্টারে করে রুমায় পৌঁছান। সেখানে রুমা সোনালী ব্যাংক ডাকাতি, মসজিদ-উপজেলা কমপ্লেক্সে হামলা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্র লুটের ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে সেখান থেকে হেলিকপ্টারে বান্দরবান পৌঁছানোর পর বান্দরবান সার্কিট হাউজে দুপুর আড়াইটার জেলার বিভিন্ন সরকারি বাহিনী ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অংশ নেন।
র্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন আরও বলেন, বান্দরবানের রুমা-থানচিতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো খুবই নিন্দনীয় কাজ। এ নিয়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে। অভিযানের সুনির্দিষ্ট কিছু কর্মপরিকল্পনা রয়েছে, পরিকল্পনা অনুসারে এগোচ্ছে যৌথ বাহিনী। অভিযানের স্বার্থে কিছু বিধি-নিষেধও মানতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে, তবে এটি সাময়িক। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সন্ত্রাসবিরোধী কাজ করছে যৌথ বাহিনী। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রয়েছে।
র্যাবের মহাপরিচালক আরও বলেন, টার্গেট কেএনএফের সশস্ত্র হামলাকারীরা, তাদের ধরতেই যৌথ বাহিনীর এই অভিযান। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মাঝেমধ্যে অভিযানে অনেককেই আটক করা হচ্ছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। তাদের অপরাধী বানানোর জন্য নয়, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নিরপরাধ ব্যক্তিদের ছেড়েও দেওয়া হচ্ছে। পাহাড়ে বম জনগোষ্ঠীর সবাই কেএনএফের সঙ্গে জড়িত নয়, মুষ্টিমেয় বিপথগামী কেএনএফ সশস্ত্র সদস্য। বিপথগামীরা যত দিন পর্যন্ত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে না আসে অথবা কেএনএফের সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত পাহাড়ে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চলবে। তবে কেএনএফের বম জনগোষ্ঠীর বিপথগামী সদস্যদের ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। তাদের আলোচনার জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি রয়েছে, তারা জেলা প্রশাসক, পুলিশ, ডিজিএফআই, এনএসআই, আনসার ও র্যাব সদস্যদের সঙ্গেও যোগাযোগ করে শান্তির পথে ফিরে আসতে পারে। শান্তি আলোচনার পথ বন্ধ হয়নি, এখনও খোলা আছে। সংঘাত কারোরই কাম্য নয়। বিপথগামী সবার শুভ বুদ্ধি উদয় হোক, ভুল বুঝতে পেরে অস্ত্র ছেড়ে ফিরে আসুক শান্তির পথে—এটাই সরকারের প্রত্যাশা।
এ সময় জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, পুলিশ সুপার সৈকত শাহিন, র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস্) কর্নেল মো. মাহাবুব আলম, বিজিবি বান্দরবান সেক্টর সদর দপ্তরের কর্নেল সোহেল আহমেদ, ডিজিএফআইয়ের কর্নেল মোহাম্মদ আসাদুল্লাহ জামশেদ, এনএসআই উপপরিচালক তৌহিদুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।