মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের নির্বাচনে প্রার্থী হতে দলীয় প্রধানের মানা
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের উপজেলা ভোটে অংশ না নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে তাঁদেরকে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক সাংগঠনিক সম্পাদক নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজ বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দলের প্রধানের নির্দেশনা পেয়ে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক করেন। এতে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক ও উপদপ্তর সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় ওবায়দুল কাদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দপ্তরকে সারা দেশে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের মধ্যে যাদের স্বজন ও পরিবারের সদস্য নির্বাচন করছেন, সেই তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন।
দপ্তর সূত্রে আরও জানা যায়, দলের নেতাদের দাবির মুখে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দেওয়া হয়নি। মূল লক্ষ্য ছিল সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং নির্বাচনটি প্রভাবমুক্ত রাখা। কিন্তু ভোট শুরুর পর দেখা যাচ্ছে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা নিজের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের ভোটে দাঁড় করিয়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন। এটা পছন্দ করছেন না দলের প্রধান শেখ হাসিনা। তিনি কঠোরভাবে প্রভাবমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
এবার উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে চার পর্বে। প্রথম পর্বে ১৫০টি উপজেলায় ভোট হবে আগামী ৮ মে। এসব উপজেলার মধ্যে ১২-১৫ জন মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়রা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন বলে জানা গেছে।
নাটোরের সিংড়ায় এক চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের পর মারধরের ঘটনায় অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. লুৎফুল হাবিব রুবেলকে আগামী সোমবার নির্বাচন কমিশনে (ইসি) তলব করা হয়েছে। এ ঘটনার জন্য ভুক্তভোগী দেলোয়ার হোসেনের পরিবার মো. লুৎফুল হাবিব রুবেলকে দায়ী করছে। রুবেল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ও নাটোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক।
অপরদিকে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নিজের ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়নকাজ না করার হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী।
আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, এসব খবরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তর্কোন্দলের তথ্য দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিগোচর হলে তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। এরপর দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ডেকে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর এই নির্দেশনা দেন।