‘কুমিল্লার শাসনগাছায় শব্দদূষণ ৯২.২ ডেসিবল’
কুমিল্ল নগরীতে সহ্যের দ্বিগুণ শব্দদূষণ হয়। যার মধ্যে নগরের শাসনগাছা এলাকায় শব্দদূষণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। শব্দ সহ্যের স্বাভাবিক মাত্রা ৪৫ ডেসিবল। তবে নগরীর শাসনগাছায় ৯২.২ ডেসিবল, কান্দিরপাড়ে ৮২.১ ডেসিবল, টমসমব্রিজে ৮০.৮ ডেসিবল, পুলিশ লাইনে ৭৯.৩ ডেসিবল এবং জাঙ্গালিয়ায় ৭৮.৭ ডেসিবল শব্দদূষণ হচ্ছে। এই শব্দদূষণ বেশি হয় সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোছাব্বের হোসেন মোহাম্মদ রাজীব এই তথ্য তুলে ধরেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা জানান, কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় তাঁরা শব্দদূষণের উপর জরিপ করে এই পরিসংখ্যান পেয়েছেন।
সভার আগে একটি শোভাযাত্রা নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ফাহমিদা মোস্তফার সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এ কে এম আছাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন, ডেপুটি সিভিল সার্জন নাজমুল আলম, জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল হাসানাত বাবুল, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম, জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি আবদুস সালাম, জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম প্রমুখ।
জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোছাব্বের হোসেন মোহাম্মদ রাজীব বলেন, শব্দদূষণের কারণে শ্রবণ শক্তি হ্রাস ও স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়। শিশুর মেধাবিকাশ ব্যাহত হয়। দ্রুত নগরায়ণ ও নির্মাণকাজে যন্ত্রাংশের ব্যবহার, হাইড্রোলিক হর্ন, মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন শব্দদূষণের অন্যতম কারণ।
মোছাব্বের হোসেন মোহাম্মদ রাজীব আরও বলেন, বর্তমানে শব্দদূষণের কারণে ৪০ শতাংশ লোকের কানে শুনতে সমস্যা হয়, মাথা ধরা ২৫ শতাংশ লোকের, পারস্পরিক কথা বলতে সমস্যা হয় ২০ শতাংশ, বাকি ১৫ শতাংশ হয় অন্যমনস্কতা, অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন ও ঝিমুনিতে আক্রান্ত।
মোছাব্বের হোসেন মোহাম্মদ রাজীব বলেন, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে নীরব এলাকা ঘোষণা করতে হবে। মাইকের ব্যবহার সীমিত করতে হবে। প্রয়োজনে ৯৯৯ নম্বরে অভিযোগ করেও প্রতিকার চাইতে হবে।
প্রতিবছর এপ্রিল মাসের শেষ বুধবার আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। শব্দদূষণ নীরব ঘাতক নয়, শব্দদূষণ মানুষের জন্য সরব ঘাতক ও শব্দসন্ত্রাস। আন্তর্জাতিকভাবে ১৯৯৬ সাল থেকে এ দিবসটি পালন শুরু হয়।