ফরিদপুরে তাপপ্রবাহে ১৩ শিক্ষক-শিক্ষার্থী অসুস্থ
ফরিদপুরের সালথায় তীব্র তাপপ্রবাহে তিন শিক্ষক ও ১০ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদের সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ রোববার (২৮ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের রামকান্তুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
এরমধ্যে রানিতা নামে এক শিশুর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
তবে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি, গরম ও মনের ভয়ে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
অসুস্থদের মধ্যে শিক্ষক শুক্লা রানী শীল, রেবেকা বেগম, রবিউল ইসলাম, শিক্ষার্থী সাদিয়া, নাহিদ ও তৌকিয়ার নাম জানা গেছে। বাকিদের নাম জানা যায়নি।
রামকান্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শুক্লা রানী বলেন, ‘রোজার ঈদের পর থেকে স্কুল বন্ধ ছিল। প্রধান শিক্ষকও মাতৃত্বকালিন ছুটিতে রয়েছেন। দীর্ঘদিন পর আজ স্কুল খোলা হয়। সকালে স্কুলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে প্রথমে বিদ্যালয়ের ক্লাস রুম ও মাঠে জমে থাকা বর্জনা পরিষ্কার করার কাজ শুরু করি। এ সময় একটি গুইসাপ মরা ছিল বারান্দায়। তারপর আবার বাথরুম করে রেখেছিল যেন কে। এসবের গন্ধে আমি কয়েকবার বমি করি। তখন এক ছাত্র এসে বলে ম্যাডাম টিউবয়েলের পানিতে বিষ আছে। এই আতঙ্কে পানি পান করা শিক্ষার্থীরা ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে।’
শুক্লা রানী আরও বলেন, ‘আমিসহ অসুস্থ সবাইকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে ভর্তি করা হয়। এখন সবাই সুস্থ আছে।’
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামাল বিশ্বাস বলেন, খবর পেয়ে স্কুলে এসে অসুস্থ সবাইকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে পাঠানো হয়। এখন সবাই সুস্থ আছে।
সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল মমিন দুপুরে বলেন, টিউবওয়েলের পানিতে কোনো ধরনের বিষক্রিয়া পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। অসুস্থদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে সবাই এখন শঙ্কামুক্ত।
সালথা থানার ওসি ফায়েজুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রথমে খবর পেয়েছিলাম টিউবওয়েলের পানি খেয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পরে ঘটনাস্থলে এসে ডা. এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, তিনি জানিয়েছেন টিউবওয়েলের পানিতে বিষক্রিয়ার কোনো লক্ষণ তাঁরা পাননি।’
ই্উএনও মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, ‘আজ স্কুল খোলার পর শিক্ষক-শিক্ষাথীরা সকালে স্কুলে এসে টিউবওয়েলের পানি খেয়ে অসুস্থ পড়লে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন সবাই মোটামুটি সুস্থ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে, তারা বিষক্রিয়ার কোনো আলামত পায়নি। গরমের কারণেও এ ঘটনা ঘটতে পারে। তারপরও টিউবওয়েলের পানি আমরা পরীক্ষা করে দেখব। একইসঙ্গে আগামীকাল থেকেই ছাত্রছাত্রীরা যাতে নিরাপদ পানি পান করতে পারে, সে ব্যবস্থা করা হবে।’