স্থায়ী জামিন পেলেন মুশতাক আহমেদ
কলেজ ছাত্রীকে প্রলোভন ও জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগের মামলায় রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ এবং ওই কলেজের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীর স্থায়ী জামিন দিয়েছেন আদালত।
আজ সোমবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক শওকত আলী এই আদেশ দেন। এদিন আদালতে এ মামলার অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় বিচারক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২ জুন ধার্য করেন।
অন্যদিকে খন্দকার মুশতাক আহমেদ ও ফাওজিয়া রাশেদী স্থায়ী জামিনের আবেদন করলে আদালত প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী এ তথ্য জানিয়েছেন।
নথি থেকে জানা গেছে, গত বছরের ১ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক বেগম মাফরোজা পারভীনের আদালতে এ মামলা করা হয়। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে গুলশান থানাকে এজাহার গ্রহণের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে মামলাটি দায়েরে তথ্যগত ভুল হয়েছে উল্লেখ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানা।
এর পরে গত ৩ মার্চ পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে এই নারাজি দাখিল করেন মামলার বাদী ওই শিক্ষার্থীর বাবা মো. সাইফুল ইসলাম। আদালত নারাজির আবেদন মঞ্জুর করে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।
এজাহারে বলা আছে, বাদীর মেয়ে (ভিকটিম) মতিঝিল আইডিয়ালের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। আসামি মুশতাক বিভিন্ন অজুহাতে কলেজে আসতো এবং ভিকটিমকে ক্লাস থেকে প্রিন্সিপালের কক্ষে ডেকে আনতো। খোঁজ-খবর নেওয়ার নামে আসামি ভিকটিমকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতো। কিছুদিন পর আসামি মুশতাক ভিকটিমকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় ভিকটিমকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোর পূর্বক বিয়ে এবং তাঁকে ও তার পরিবারকে ঢাকা ছাড়া করবে বলে হুমকি দেয়।
ভিকটিম এরকম আচরণের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষকে (২নং আসামি) ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। তিনি (অধ্যক্ষ) ব্যবস্থা করতেছি বলে আসামি মুশতাককে তার রুমে নিয়ে আসেন এবং ভিকটিমকেও ক্লাস থেকে নিয়ে এসে রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আসামিকে সময় ও সঙ্গ দিতে বলেন।
এ বিষয়ে বাদী ২নং আসামির কাছে প্রতিকার চাইতে গেলেও কোনও সহযোগিতা করেননি বরং আসামি মুশতাককে অনৈতিক সাহায্য করে আসতে থাকেন। বাদী উপায় না পেয়ে গত ১২ জুন ভিকটিমকে ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়িতে নিয়ে গেলে আসামি মুশতাক তার লোকজন দিয়ে ভিকটিমকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর বাদী জানতে পারেন আসামি ভিকটিমকে একেক দিন একেক স্থানে রেখে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেছে এবং যৌন নিপীড়ন করছে।