গরমে পুড়ছে দেশ, বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা
টানা তাপপ্রবাহের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশ। মৃদু থেকে অতি তীব্র এই তাপপ্রবাহ ভেঙেছে ৭৬ বছরের রেকর্ড। পারদের মাত্রাও ভাঙতে চলেছে ৫২ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাকে। এদিকে, বাতাসে জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়ছে। প্রচণ্ড গরমে যেন পুড়ে যাচ্ছে ত্বক। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না কেউ। দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ আয় কমে যাওয়ায় পড়েছে বিপাকে। শিশু ও বয়স্করা আছেন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। এরইমধ্যে গত সাত দিনে সারা দেশে হিট স্ট্রোকে ১০ জন মারা গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম। এমন পরিস্থিতিতে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছে সারা দেশে। জেলায় জেলায় আদায় করা হচ্ছে নামাজ, চলছে দোয়া।
সদরঘাট থেকে মিরপুরে যাচ্ছিলেন আবুল কালাম আজাদ। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, তীব্র গরমে শরীর থেকে পানি বের হচ্ছে। রাতে ঠিকমত ঘুমাতে পারছি না। রাস্তার পিচও গরম হয়ে যাচ্ছে। এই এক অসহনীয় কষ্ট। তিনি বলেন, গাড়িতে উঠেছি বাসায় যাওয়ার জন্য। কিন্তু গাড়ির মধ্যে সিটও গরম। এমনকি, বাইরের বাতাসও গরম। মাঝেমধ্যে মাথা যন্ত্রণা করছে। হিট স্ট্রোকের ভয়ে আছি। তাই প্রয়োজন ছাড়া আমি বা আমার পরিবারের কেউ বাইরে বের হচ্ছি না।
ইয়াসিন নামের এক ব্যক্তি বলেন, গরমে রাতের ঘুম হয় না। ফ্যানের বাতাসেও গরম হাওয়া লাগে। রাতের ঘুম না হওয়ায় দিনের বেলা অফিসে কাজ করতেও সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, পানির বোতল নিয়ে ঘুরছি। হিট স্ট্রোকের ভয়ে বিভিন্ন দপ্তরের পরামর্শ মেনে একটু পরপর পানি খাচ্ছি। বৃষ্টি হলে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরবে বলে ধারণা তার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত সাত দিনে সারা দেশে হিট স্ট্রোকে ১০ জন মারা গেছে। এর মধ্যে গতকাল সোমবার হিট স্ট্রোকে তিন পুরুষ মারা গেছে। এদের দুজন মাদারীপুরে ও একজন চট্টগ্রামে মারা যায়। এ ছাড়া হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে।
আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা গেছে, গরম থেকে বাঁচতে ছায়া খুঁজছেন অনেকে। সড়কের মোড়ে মোড়ে, অলিতে গলিতে বিক্রি হচ্ছে শরবত, লেবুপানি। লাইন ধরে মানুষ পান করছেন এসব। দোকানিরা জানান, বোতলজাত পানির বেড়েছে চাহিদা। বেড়েছে, শসা-গাজরের চাহিদাও।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, আজ দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যাশোরে ৪৩ দশমিক আট ডিগ্রি সেলসিয়াস। একই দিনে চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে, আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, আগামী বুধবার (১ মে) রাত থেকে তাপমাত্রা কমা শুরু হতে পারে। একইসঙ্গে হতে পারে বৃষ্টি। যদিও এমন আভাসে দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষক। ক্ষেত্রের প্রায় ৫০ ভাগ ধানই এখনও পাকেনি। এমন অবস্থায় ঝড়বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।