উপজেলা নির্বাচনে ছেলের পক্ষে কাজ করায় শাজাহান খানকে চিঠি
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ছেলের পক্ষ হয়ে কাজ করায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল বুধবার (৮ মে) অনুষ্ঠেয় সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আসিবুর রহমান আসিব খানের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণায় কাজ করায় তাকে এ চিঠি দিয়েছে নির্বাচন অফিস।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হয়। এর আগে গত রোববার সন্ধ্যায় শাজাহান খানের নতুন শহরের বাসভবনে এ চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয়।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, মাদারীপুর-২ আসনে টানা আট বারের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের বড় ছেলে আসিবুর রহমান আসিব খান প্রথমবারের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তাঁর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী শাজাহান খানের চাচাতো ভাই ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পাভেলুর রহমান শফিক খান। নির্বাচনে এলাকায় থেকে কোনো সংসদ সদস্য প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না, এমন নীতিমালা থাকলেও তা অমান্য করে ছেলের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেন শাজাহান খান। এ নিয়ে এমপির চাচাতো ভাই রিটার্নিং অফিসারের কাছে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়, সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে শাজাহান খান ছেলের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণা ও বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন। গোপনেও ইউনিয়ন পর্যায়ে একাধিক নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন। এ নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এ ছাড়া চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী পাভেলুর রহমান শফিক খান সংবাদ সম্মেলন করেও সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, ‘১৫টিরও বেশি চিঠি দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনে। এর একবারও কোনো ব্যবস্থা নেননি রিটার্নিং অফিসার। নির্বাচন কমিশনের এমন চুপ থাকাটা প্রশ্নবিদ্ধ। শাজাহান খান লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে নির্বাচনের দিন ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করবে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে। এতে সুষ্ঠু ভোট হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ জন্য প্রশাসনের জোরালো ভূমিকা কামনা করছি।’
এদিকে, আসিবুর রহমান আসিব খান বলেন, ‘নির্বাচনের দিন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য নানামুখী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে শফিক খান। ভোটারদের মধ্যে টাকা ছড়াচ্ছে, বহিরাগতদের দিয়ে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এর কারণ আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জেনে গেছে, সে বিজয়ী হতে পারবে না।’
অভিযোগ অস্বীকার করে শাজাহান খান বলেন, ‘মাদারীপুরে যখন থাকি, তখন স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে এলাকার উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে কথাবার্তা বলি। এর বাইরে অন্যকিছু না। যারা অভিযোগ দিচ্ছে, তারা ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য এ কাজ করছে।’
সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আহম্মেদ আলী বলেন, ‘শফিক খানের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই শাজাহান খানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচনি কোনো কার্যক্রমে অংশ না নিতেও বলা হয়েছে।’