পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু : যাত্রাবাড়ী থানার ওসিসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম ফরমান আলীসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মামলা হয়েছে। আজ বুধবার (৮ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে ভিকটিম মো. রানার স্ত্রী সোনিয়া বেগম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি তাপস কুমার পাল এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলার অপর আসামিরা হলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসক ফারহানা ইয়াসমিন, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ, ডেপুটি জেলার মো. মাহবুব, পুলিশের উপপরিদর্শক চঞ্চল কুমার বিশ্বাস, উপপরিদর্শক মো. মিজানুর রহমান, সহকারী উপপরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন, কনস্টেবল হাবিবুর রহমান, কনস্টেবল জোনাব আলী, কনস্টেবল মোবারক, পুলিশের সোর্স সবুজ ও শাহ আলম।
আরজিতে বলা হয়েছে, গত ১৭ মার্চ ভিকটিম রানাকে আসামি শাহ আলম ও সবুজ ফতুল্লার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যান। ডিবি পরিচয়ে একটি গাড়িতে তুলে যাত্রাবাড়ী থানায় নিয়ে ব্যাপক শারীরিক নির্যাতন চালান। এমনকি তার দুই পা ভেঙে দেয়, বুকের মধ্যে আঘাত ও মাথার বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। ভুক্তভোগীকে নির্যাতন করার সময় আসামি সবুজ বাদীকে ফোন দিয়ে ভুক্তভোগীকে মারধর ও কান্নার আওয়াজ শোনায় এবং বলে ৫০ হাজার টাকা দিতে পারলে মার বন্ধ হবে। তখন বাদী বলেন, গরিব মানুষ যা পারি জোগাড় করে নিয়ে আসছি, আপনারা আমার স্বামীকে বাঁচান। এরপর বাদী ২০ হাজার টাকা এনে সবুজের হাতে দেন। তখন বাদীকে এসআই মিজানুর রহমানের কাছে নিয়ে গেলে তাকে গালিগালাজ করে। এসময় বাদী কান্নাকাটি করলে তাকে লাথি মেরে ফেলে দেওয়া হয়। বাদীকে পুনরায় পেটাতে থাকে এই দৃশ্য দেখে তার ছোট ছেলে রাতুল অজ্ঞান হয়ে যায়। তখন ছেলেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জ্ঞান ফেরানো হয়। পরে পুলিশ বাদীকে কোর্টে যেতে বলে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৮ মার্চ কোর্টে গিয়ে ভুক্তভোগীর সঙ্গে দেখা করার জন্য গারদে যান। তবে কোন খোঁজ না পেয়ে বাসায় চলে আসেন। ১৯ মার্চ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরাণীগঞ্জ এ গিয়ে ভুক্তভোগীকে দেখার জন্য টিকিট করেন। জেল কর্তৃপক্ষ বাদীকে জানায় যে, ভুক্তভোগী মো. রানা জেলে নেই। তখন বাদী চিন্তায় পড়ে যায় ওইখান থেকে থানায় এসে কোনো তথ্য না পেয়ে বাসায় চলে আসেন এবং নিকট আত্মীয় স্বজনদের বিষয়টি জানান। গত ২০ মার্চ সকাল সাড়ে ৮টায় একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন দিয়ে বলা হয়, ঢামেকের মর্গে আসতে। তখন বাদী গিয়ে ভুক্তভোগীকে মৃত অবস্থায় শনাক্ত করেন।