নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা পূর্বধলা উপজেলা চেয়ারম্যানের
কর্মী-সমর্থকদের নিরাপদ রাখতে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন টানা দুই মেয়াদে নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম সুজন। তিনি উপজেলা যুবলীগেরও সভাপতি। আজ মঙ্গলবার (১৪ মে) তাঁর নির্বাচন পরিচালনা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ ঘোষণা দেন।
জাহিদুল ইসলাম সুজন জানান, নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর শেষ মুহূর্তে স্থানীয় রাজনীতিতে অস্থির পরিস্থিতি, টাকার খেলা, পেশি শক্তির মহড়া থেকে কর্মীদের নিরাপদ রাখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন।
এ সময় সাংবাদিক, দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থক ও শুভনুধ্যায়ীদের উপস্থিতিতে জাহিদুল ইসলাম সুজন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে জাহিদুল ইসলাম সুজন ‘ঘোড়া’ প্রতীক নিয়ে মাঠে আছেন।
প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের কোনো সুযোগ নেই, এরপরও কেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন এমন প্রশ্নে জাহিদুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘোষণা দিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পরও ব্যালটে আমার নামে বরাদ্দকৃত প্রতীক থেকেই যাবে আর নির্ধারিত প্রতীকে প্রাপ্ত নগণ্য ভোট সংখ্যা সাময়িক অস্বস্তিকর ও বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে নিঃসন্দেহে।’
জাহিদুল ইসলাম সুজন আরও বলেন, স্থানীয় রাজনীতিতে অস্থির পরিস্থিতি, অস্বাভাবিক টাকার খেলা, পেশি শক্তির মহড়া থেকে আমার কর্মীদের নিরাপদ রাখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।’
টানা দুই মেয়াদে উপজেলা চেয়ারম্যান থেকেও কেন নির্বাচনে আর্থিক লেনদেনে ভয় এমন প্রশ্নে জাহিদুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘গত ৩০ বছর জনমানুষের কল্যাণে নিজেকে নিবেদন করেছি। আমি চেষ্টা করেছি জনগণের সঙ্গে থাকার, তাদের জন্য কাজ করার। ভেবেছি আমার দীর্ঘ এই রাজনৈতিক জীবনে মানুষের ভালোবাসাই আমার বড় সম্পদ। আমার উপজেলা চেয়ারম্যান পদের সবটুকু ক্ষমতা, সক্ষমতা, বরাদ্দ আমি এই উপজেলার মানুষের কল্যাণে ব্যয় করেছি। চেয়ারম্যান পদে থেকে নিজের জন্য কিছুই করিনি। সাধারণ মানুষের নির্ভরতা ও ভালোবাসার প্রতি আস্থা রেখেই আমি অর্থ উপার্জনের দিকে মনোনিবেশ করিনি। এত কিছুর পরও অর্থ ও পেশিশক্তির ওপর নির্ভর করে যে নির্বাচন করতে হবে আমি সে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোই শ্রেয় বলে মনে করছি।’
অন্য কোনো প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি সমর্থন আছে কি না জানতে চাইলে সুজন বলেন, ‘আমি সরে দাঁড়ানোয় তিনজন প্রার্থীর মধ্যে যিনি পূর্বধলা উপজেলার উন্নয়নের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন তাঁকেই ভোটাররা গ্রহণ করবেন বলে আমি মনে করি। তার পরও সব দিক বিবেচনায় দু-একদিনের মধ্যে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সব নেতা-কর্মীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’
এ সময় দীর্ঘ পথ চলায় তাঁর কোনো কথা, কাজ, সিদ্ধান্ত বা আচরণে কেউ সামান্যতম কষ্ট পেয়ে থাকলে তিনি তাদের প্রতি বিশেষভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে পূর্বধলা উপজেলার সর্বস্তরের জনগণের জন্য আগামী দিনে নতুন নেতৃত্বে সুন্দর একটি সমাজ প্রত্যাশা করেন।