ঋণ করে রিজার্ভ বাড়ানোর চেষ্টা করছে সরকার : নজরুল ইসলাম খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘আগামী তিন মাসের মধ্যে রিজার্ভ শূন্যতে পৌঁছে যাবে। ঋণ করে রিজার্ভ বাড়ানোর চেষ্টা করছে সরকার।’
আজ বুধবার (১৫ মে) রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ লেবার পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আবদুল মতীনের ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতীয় ঐক্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বিএনপিনেতা নজরুল ইসলাম।
‘দেশ একটি দুঃসময় অতিক্রম করেছে’ বলে মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সরকারের উৎপাদন করার চেয়ে আমদানি করার চাহিদা বেশি। কমে গেছে রপ্তানি আয়ও। দেশে প্রবাসী আয় কমেছে। দেশকে এখন পুরোপুরিভাবে পরনির্ভরশীল করে ফেলেছে আওয়ামী লীগ। কোনো দিক থেকে আমরা ভালো কিছু দেখছি না। দেশে ব্যাংক লুট হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কোনো বিচার হচ্ছে না। দেশে রিজার্ভ কমে যাচ্ছে, কিন্তু সরকার এখন ঋণ করে রিজার্ভ বাড়ানোর চেষ্টা করছে। আমাদের রপ্তানির আয় এখন হুমকির মুখে। আমাদের দেশে গ্যাসের সন্ধান করে মানুষের চাহিদা মেটানোর চেয়ে গ্যাস আমদানি করার চাহিদা সরকারের বেশি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দেশে লোডশেডিং হচ্ছে, আর অন্যদিকে ক্যাপাসিটির নামে কোটি কোটি টাকা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই লুটপাটের মাশুল দিতে হচ্ছে জনগণকে। সারা দুনিয়ায় তেলের দাম কমে গেলেও আমাদের দেশে তেলের দাম বেড়ে গেছে। দেশে বেকার সংখ্যা বেড়ে গেছে। জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশের গবেষকরা বলছে, প্রতি বছর দেশে গরিবের সংখ্যা বাড়ছে। শিশু মৃত্যুর হার বাড়ছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়ার মানে হলো প্রকৃত মজুরি কমে যাওয়া। এই সরকার কোনো কিছুর পরোয়া করে না।’
নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, ‘এদেশের সাধারণ মানুষ বড় কষ্টে আছে। আমাদের ১৬টা চিনিকল ছিল। এখন বর্তমানে মাত্র সাতটা আছে, কিন্তু সেগুলোও তেমন ভালো নয়। আমরা আজকে নির্ভরশীল হয়ে গেছি। আজকে উৎপাদন করে চাহিদা মেটানোর চেয়ে আমদানি করে চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এদেশটাকে একেবারে নির্ভরশীল করে ফেলা হয়েছে। যে দেশ পরনির্ভরশীল হয়, ঐদেশকে কোনোমতে ভালো দেশ হিসেবে গণ্য করা যায় না। দেশকে বাঁচাতে হবে। যারা দেশকে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দিয়েছে, তাদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে বলেন, ‘দেশে যদি ছাত্র আন্দোলন থাকত, তাহলে হয়তো এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারত না। এই সরকার খুব একটা সুখে নেই। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের চেয়ে উপজেলা নির্বাচন আরও খারাপ হয়েছে। দেশে রিজার্ভ কমে গেছে। তিন মাসে বাংলাদেশের রিজার্ভ একেবারে জিরো হয়ে যাবে। বাংলাদেশের সরকার ক্ষমতায় নিয়ে একটু বেশি দুশ্চিন্তায় আছে। আমাদেরকে একটা কার্যকর ঐক্য তৈরি করে আন্দোলনে নামতে হবে। একটু বড় ধরনের ধাক্কা দিলেই পড়ে যাবে সরকার।’
বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলালসহ আরও অনেকে।