নিষিদ্ধ সংগঠন জামাতুল আনসারের সদস্য গ্রেপ্তার
নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সদস্য আব্দুর রহিম (৩২) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট সিটিটিসি। আজ শুক্রবার (১৭ মে) ডিএমপির এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।
সিটিটিসি জানায়, বুধবার অভিযান চালিয়ে গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকা খেকে আব্দুর রহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেসময় তার কাছ থেকে একটি ৭.৬৫ বিদেশি পিস্তল, চারটি দেশীয় তৈরি বন্দুক, তিনটি দেশীয় তৈরি বারুদ লোডেড গান, একটি দেশীয় তৈরি ওয়ান শুটার, একটি দেশীয় তৈরি ধারাল অস্ত্র, ১৬টি গুলি এবং কার্তুজসহ বিভিন্ন সামগ্রী জব্দ করা হয়।
মো. আসাদুজ্জামান দাবি করেন, কুকি চিনের পাশাপাশি স্থানীয় কবির আহাম্মদ ও আব্দুর রহিম শারক্বিয়ার সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য অর্থের বিনিময়ে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করতেন। আব্দুর রহিম কক্সবাজার ও বান্দরবান এলাকায় নও-মুসলিমদের নিয়ে কাজ করার আড়ালে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’নামক সংগঠন গড়ে তোলেন। নও-মুসলিমদের নিয়ে কাজ করার সময় স্থানীয় অস্ত্র সরবরাহকারী মো. কবির আহাম্মদ ও আব্দুর রহিম-কে কুকিচিনের দাওয়াত দেন। মো. কবির আহাম্মদ ও আব্দুর রহিম সংগঠনের হয়ে কাজ করতে রাজি হয় এবং অস্ত্র ও গুলি সরবরাহ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। শামিন মাহফুজ ও অস্ত্র সরবরাহকারী কবির গ্রেপ্তার হলে এবং পাহাড়ে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হলে আব্দুর রহিম ও তার সহযোগীরা আত্মগোপনে চলে যান।
মো. আসাদুজ্জামান আরও জানান, আব্দুর রহিম ২০১৯ সালের দিকে থেকে ‘রহিম ডাকাত’ গ্রুপের নেতৃত্ব দিয়ে রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়া’-কে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহের লক্ষ্যে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির গহীন বনে ড্রামের ভেতরে মাটির নিচে লুকিয়ে রেখেছেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের একটি টিম বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির ছাগল খাইয়্যা এলাকার পাহাড়ের ঢালে ঘন জঙ্গলের মধ্যে মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা আগ্নেয়াস্ত্র, গুলিসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে। এছাড়া আসামির বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র, ডাকাতি, অপহরণ, বনভূমি ধ্বংস ইত্যাদি অভিযোগে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজার জেলার রামু থানায় মোট ১২টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সিটিটিসিপ্রধান জানান, গত ২০২৩ সালের ২৩ জুন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র মাস্টারমাইন্ড ও সংগঠনের প্রধান শামিন মাহফুজকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে গ্রেপ্তারের পর শারক্বিয়ার প্রশিক্ষণ, অস্ত্র-গুলির উৎস, অর্থায়ন সম্পর্কে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শামিন মাহফুজকে গ্রেপ্তারের আগে তার এর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইয়াছিন (৪০) এবং অস্ত্র সরবরাহকারী মো. কবির আহাম্মদকে (৫০) গত বছরের ৮ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করা হয়।