স্বাধীনতার মূল চেতনা আওয়ামী লীগ ধ্বংস করেছে : মির্জা ফখরুল
স্বাধীনতার মূল চেতনা আওয়ামী লীগ ধ্বংস করেছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় অপকর্ম থামে না। সরকারকে নিজেদের শক্তিতে পরাজিত করতে হবে। সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে তাদের পরাজিত করব।
আজ মঙ্গলবার (২১ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব। জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণ সভার আয়োজন করে জাগপার একাংশ।
সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এখানে কারণ দেখানো হয়েছে—গণতন্ত্র বিনষ্ট ও দুর্নীতির দায়ে। সরকার বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের দমন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সেনাবাহিনী, বিচার বিভাগসহ সব প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করেছে। এমনকি, সাংবাদিকদের লেখার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুর্নীতি আর লোপাটের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদেরকে এই ব্যাংকগুলোর দায়িত্ব দিয়েছেন। পুরো দেশের সম্পদ লুটপাট করেছে তারা।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের স্যাংশনে অনেকে খুশি হয়েছে, কিন্তু এটা আরেকটা বিভ্রান্তি করা। র্যাবের ওপরও এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তাতে তাদের কিছুই হয়নি, তাতে তাদের অপকর্ম থামেনি। আমার ঘর যদি নিজে সামলাতে না পারি, কেউ এসে সামলে দেবে না। নিজেদের শক্তি নিয়ে এদেরকে পরাজিত করতে হবে। উৎখাত করব কেন? ভোটের মধ্য দিয়ে এদেরকে পরাজিত করব, যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়।’
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে সবাইকে আবার ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারকে পরাজিত করে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব। ইনশাআল্লাহ।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একদলীয় বাকশাল কায়েম করতে সরকার অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এটা তাদের সুকৌশল। গণতন্ত্রের আলখেল্লা পরে নির্বাচন নাটক দেখাচ্ছে, এটা কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। গত ১৫ বছরে যে অপকর্ম করেছে, সেই ভয়ে তারা সুষ্ঠু ভোট দিতে ভয় পায়। এখন যে উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে, তাতেও জনগণের সায় নেই। প্রকৃত অর্থে এর মাধ্যমে কোনো জনগণের রায়ের প্রতিফলন হচ্ছে না।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি, ক্ষমতায় যেতে চাই না, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। ভোটের অধিকার চাই। এতে আওয়ামী লীগের এত ভয় কেন। কারণ, তারা যে অপকর্ম করেছে এগুলো তন্ন তন্ন করে খুঁজে বের হবে সেই ভয়ে। স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল দাবি ছিল গণতন্ত্র, সেই চেতনা আওয়ামী লীগ ধ্বংস করেছে। এখন আবার একদলীয় শাসনের দিকে যখন আওয়ামী লীগ নিয়ে যেতে চায়, তার মূল বাধা বিএনপি।’
‘তরুণ সমাজ কোথায়, দেশের এই অবস্থায় তাদেরকে কি আলোড়িত করে না?’ এমন প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা অন্য কোনো পথ চিনি না, আন্দোলনের বিকল্প নেই। জনগণকে বেরিয়ে আসতে হবে। রুখে দাঁড়াতে হবে। আমরা কখনো যেন হাল না ছাড়ি, বুকে বল নিয়ে যেন চলি।’
স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য দেন জাগপার একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও যুব জাগপার সভাপতি মীর আমির হোসেন আমুসহ সমমনা জোটের নেতারা।