দেশে অর্থনৈতিক নৈরাজ্য চলছে : রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘দেশে চলছে এক অর্থনৈতিক নৈরাজ্য। ব্যাংকগুলো টাকার জন্য হাহাকার করছে। ব্যাংক ঋণ বিতরণ করছে আমানতকারীদের অর্থ থেকে, আবার ওই ঋণের অর্থ ক্ষমতাঘনিষ্ঠ লুটেরারা ফেরত দিচ্ছে না। ইতোমধ্যে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে, আবার ব্যবসায়ীরা চরম ডলার সংকটে গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য আমদানির জন্য এলসি খুলতে পারছে না।’
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএননপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বলেন রিজভী।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ২৬১টি স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেইকেল, অর্থাৎ এক ধরনের স্টেশন ওয়াগন ক্রয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী মত দিয়েছেন। প্রতিটির মূল্য এক কোটি ৪৬ লাখ টাকা। গত ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের আগেই কেনার কথা ছিল, যা উৎকোচ হিসেবেই মানুষ বিবেচনা করেছে। যাইহোক সেই সময় এই ক্রয়ের বিষয়টি স্থগিত রেখে ডামি নির্বাচনে কর্মকর্তাদের অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতাস্বরূপ এখন তাদের তা দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেশ ও জনগণ অপাঙক্তেয়, শুধু ক্ষমতাই আরাধ্য। সরকারের এই নীতি কতৃর্ত্ববাদী শাসনের এক চরম দৃষ্টান্ত।’
রিজভী বলেন, ‘সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলমান ছাত্র আন্দোলন তার একটি উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত। সেখানে অনেককে গ্রেপ্তার করা হলেও কাউকে গুলি করা হয়নি। ক্ষমতাশালী লোকের পক্ষে যে ব্যক্তি অপকর্ম করে, সেই ব্যক্তির ভয়াবহ অপকর্মকে ঢাকতে পারে না রাষ্ট্রের প্রধান ক্ষমতাশালী ব্যক্তি। জেনারেল আজিজের অপকর্মের দায় শেখ হাসিনাসহ ডামি আওয়ামী সরকারের। সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ ও সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীররা আওয়ামী ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় গেস্টাপো বাহিনীর ন্যায় ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার হরণেও ভূমিকা রেখেছে তারা।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আজকে আবারও ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ, দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি দলের সন্ত্রাসীদের ন্যাক্কারজনক হামলা, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ফরমায়েশি রায়ে সাজা ও গ্রেপ্তারের বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। বাংলাদেশ যেন এখন কারবালার প্রান্তর। ইতোমধ্যে ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার আবু আশফাককে গ্রেপ্তার করে কারাগারে অন্তরীণ করা হয়েছে। আন্দোলনের গতিকে স্তিমিত করার জন্য আবু আশফাককে কারাগারে প্রেরণসহ দেশব্যাপী গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হচ্ছে। ডামি সরকার আবু আশফাকদেরকে ভয় পায় বলেই নিপীড়ণ, নির্যাতন ও গ্রেপ্তারের চক্রান্ত অব্যাহত রেখেছে।’
রিজভী বলেন, ‘ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ঝলককে শিল্পকলা একাডেমির সামনে ছাত্রলীগের গুন্ডারা বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে চাপাতি, হকিস্টিক ও রামদা দিয়ে রক্তাক্ত করেছে। সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির ওপর ক্যাম্পাসে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী ছাত্রশিবির আখ্যা দিয়ে সবুজ বিশ্বাস নামে এক হিন্দু ছাত্রকে ছাত্রলীগের ক্যাডারর ব্যাপক মারধর করে হলছাড়া করেছে। ছাত্রলীগ এখন মূর্তিমান আতঙ্ক। নারী ও শিশু নির্যাতন থেকে শুরু করে সব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তারা। রাস্তাঘাট, বাড়িসহ এদের হাতে মানুষের জীবন অনিরাপদ। শেখ হাসিনার মগের মুল্লুকের মগ দস্যু হিসেবে এরা অপহরণকারী ও শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্টকারী। এরা নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের শত্রুতে পরিণত হয়েছে।’