লক্ষ্মীপুরে আটকে আছে দুই শতাধিক যাত্রী
শনিবার দুপুর থেকে লঞ্চ-ফেরি বন্ধ থাকায় চট্টগ্রাম, সিলেটসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ভোলা-বরিশালের উদ্দেশে আসা দুই শতাধিক যাত্রী লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীরহাট লঞ্চঘাটে আটকে রয়েছে। আজ রোববার (২৬ মে) সন্ধ্যায় লঞ্চ ও ফেরিঘাট এলাকায় গিয়ে আটকেপড়া যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমাল বাংলাদেশ উপকূলে ধেয়ে আসছে। এর প্রভাবে লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে তীব্র জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়া শুরু হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিভিন্ন এলাকায় দুপুরের পর থেকে থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। লঞ্চঘাট এলাকায় নৌযান মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে নৌপুলিশকে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখতে মাইকিং করে প্রচারণা চালাতে দেখা যায়।
চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেট থেকে আসা কয়েকজন যাত্রী জানায়, তারা কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চঘাটে আসে। কিন্তু লঞ্চ ও ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় তারা বাড়ি যেতে পারেনি। তিন-চার দিনের ছুটির দুদিনই লঞ্চঘাটে কেটে গেল। তারা ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে অবগত থাকলেও এত দ্রুত সময়ের মধ্যে লঞ্চ ও ফেরি বন্ধ হয়ে যাবে তা জানত না। কখন লঞ্চ ও ফেরি ছাড়া হবে তাও অনিশ্চিত। এতে অনেকেই আবার কর্মস্থলে ফিরে যাচ্ছে।
লঞ্চ কর্তৃপক্ষ জানায়, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, বরিশাল নৌরুটে বর্তমানে চারটি লঞ্চ চলাচল করে। এর মধ্যে একটি বরিশাল ও অন্য তিনটি ভোলার ইলিশাঘাট পর্যন্ত যায়।
ফেরি কর্তৃপক্ষ জানায়, লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে পাঁচটি ফেরি চলাচল করে। এর মধ্যে সুফিয়া কামাল, বেগম রোকেয়া, কনকচাঁপা, কাবেরী ও কৃষাণী রয়েছে। শনিবার দুপুর ২টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফেরিগুলো মজুচৌধুরীরহাট ঘাটে রয়েছে।
মজুচৌধুরীরহাট লঞ্চঘাটের ট্রাফিক সুপার ভাইজার শরীফুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে লঞ্চ বন্ধ রয়েছে। দুটি লঞ্চ ঘাটে নৌঙর করা রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত লঞ্চ বন্ধ থাকবে।
মজুচৌধুরীরহাট ফেরিঘাটের প্রান্তিক সহকারী রেজাউল করিম রাজু বলেন, শনিবার দুপুর ২টার পর থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এখন পাঁচটি ফেরিই আমাদের ঘাটে রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন, লঞ্চঘাটের অদূরে মাতাব্বরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়ণকেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। আটকে যাওয়া যাত্রীরা সেখানে থাকতে পারবে।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুরাইয়া জাহান বলেন, ঘূর্ণিঝড় থেকে মানুষসহ গবাদিপশু রক্ষায় জেলায় ১৮৯টি স্থায়ী ও অস্থায়ী সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং করে সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে আসতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়কালীন মানুষের সেবা নিশ্চিত করতে ৬৪টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। দুর্যোগকালীন ত্রাণ তহবিলে ১৯ লাখ ২০ হাজার টাকা ও ৪৫০ মেট্রিক টন চাল রয়েছে।