আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী ব্যবস্থা নেবে, আশা অর্থমন্ত্রীর
দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সাবেক এ সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী ব্যবস্থা নেবে বলে আশা প্রকাশ করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অবসরে যাওয়ার পরও সেনাবাহিনী আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।
আজ রোববার (২৬ মে) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
এর আগে অর্থমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পরিচালক কৃষ্ণমূর্তি ভি সুব্রামানিয়ানের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী দেশের ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে উল্লেখ করে বলেন, তারা যত শক্তিশালীই হোক, তাদের (ঋণখেলাপি) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেখা যাক পারি কি না। আপনারা দেখছেন, সাবেক পুলিশপ্রধানের (বেনজীর আহমেদ) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তাঁর কি ক্ষমতা কম ছিল? সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে আদালত যে ব্যবস্থা নিচ্ছেন, তাতে সরকারের সমর্থন আছে।’
সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে সরকার কী ব্যবস্থা নিচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সাবেক সেনাপ্রধানও ধরা পড়েছেন; যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিলেও বিষয়টি তো জনসমক্ষে চলে এসেছে।’
‘সাবেক সেনাপ্রধানের বিষয়ে সরকার তো কিছু করেনি’একজন সাংবাদিকের এমন মন্তব্যের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার কিছু করেনি মানে সেনাবাহিনী কিছু করবে।’
আজিজ আহমেদ তো এখন সেনাবাহিনীতে নেই, সেনাবাহিনী তার বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা নেবে? এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অবসরে যাওয়ার পরও সেনাবাহিনী কিছু করতে পারে।’
গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর সাবেক দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে আজিজ আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা সাধারণভাবে ‘যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অযোগ্য’ বিবেচিত হবেন।
২০১৮ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত তিন বছর বাংলাদেশের চিফ অব আর্মি স্টাফ ছিলেন জেনারেল আজিজ আহমেদ। তার আগে ২০১২ সাল থেকে চার বছর বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিজিবির নেতৃত্ব দেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কারণে’যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট, ফরেন অপারেশন অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্টের ৭০৩১ (সি) ধারার আওতায় বাংলাদেশের সাবেক জেনারেল আজিজ আহমেদের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে ‘আজিজ আহমেদের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়ার ওপ জনগণের বিশ্বাসকে ক্ষুণ্ন করতে ভূমিকা রেখেছে।”