সাভার থানার ইলেকট্রিশিয়ান গ্রেপ্তার, ৫ দিনের রিমান্ডে
সাবেক সংসদ সদস্য ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত সামছুদোহা খান মজলিসের স্ত্রী সেলিমা খান মজলিস হত্যাকাণ্ডের মামলায় সাভার মডেল থানার ইলেকট্রিশিয়ান সুবল কুমার রায়কে ( ৫২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আজ শুক্রবার (৩১ মে) আদালতে তোলার পর সুবলের গ্রেপ্তারের খবরটি নিশ্চিত করে পিবিআই।
১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে সুবল কুমার রায়কে আদালতে পাঠানো হলে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিবিআই ঢাকার পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা। তিনি জানান, সংসদ সদস্যের স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে সুবলকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সুবল সাভার মডেল থানায় দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ইলেকট্রিশিয়ানের কাজের পাশাপাশি থানার সামনে একটি ইলেকট্রিকের দোকানও পরিচালনা করছিলেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁকে দোকান থেকে একটি মাইক্রোবাসযোগে আসা একদল ব্যক্তি তুলে নিয়ে যায়।
আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন আসামি কি করে এত দিন সাভার মডেল থানায় দিব্যি ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে কাজ করে গেলেন সেই আলোচনাই এখন সাভারজুড়ে।
২০১১ সালের ১৪ জুনে সাভার মডেল থানা সংলগ্ন দক্ষিণপাড়ায় নিজ বাসভবনে দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হন সেলিমা খান মজলিস। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মারা যান তিনি। ঘটনার পরের দিন বিকেলে এ ঘটনায় নিহতের ছোটভাই শফিউর রহমান খান বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে আসামি করা হয়নি।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সে সময় পুলিশ সেলিমা খান মজলিসের নাতনি তিলোত্তমা খান মজলিসের স্বামী আবুল কালাম আজাদ (৩২), তাঁর খালাতো ভাই সেলিম (২৬), গৃহপরিচারিকা শরজিৎ সরকার (৩২) ও তাঁর স্বামী হরিপদ সরকারকে (৪০) আটক করে। কিন্তু বিষয়টি নানা তদন্ত সংস্থার হাত বদল হলেও শেষ পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের কোনো জট খোলেনি।
চার বছর তদন্ত শেষে ২০১৫ সালে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) হত্যাকাণ্ডে কারও সম্পৃক্ততা না পেয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। এতে পরিবারের কেউ নারাজির আবেদনও করেননি। তাই আদালত মামলার সব নথি সাভার থানায় পাঠিয়ে দিয়ে তা ধ্বংস করার নির্দেশ দেন।
পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ মামলাটির অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেয়। পিবিআই মামলার তদন্তভার নেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট আদালত, থানা ও সার্কেল অফিসে গিয়েও সিডিসহ মামলার কোনো নথি পায়নি।
সাভারে আওয়ামী রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা এক সময়ের প্রভাবশালী এ পরিবারটি দীর্ঘদিন ছিল আলোচনার বাইরে। দুই মেয়ে ও এক প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে দোতলা বাড়িটিতে থাকতেন সেলিমা খান। অন্য মেয়ে ইলোরা খান মজলিস যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। নির্বাচনের আগে মনোনয়ন লাভের প্রত্যাশায় দেশে ফিরে কিছুদিন সক্রিয় ছিলেন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে।