ভারতে ভোটের অধিকার আছে বলেই লোকসভায় তার প্রতিফলন : মির্জা ফখরুল
‘ভারতে ভোটের অধিকার আছে বলেই’লোকসভার নির্বাচনে তার প্রতিফলন’দেখছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বুধবার (৬ জুন) দুপুরে এক আলোচনা সভায় বাংলাদেশের বর্তমান নির্বাচনি ব্যবস্থা এবং ভারতের লোকসভার নির্বাচনের ঘোষিত ফলাফলের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে বাংলাদেশে যে দানব গত ১৫ বছর ধরে আমাদের ঘরের মধ্যে, বুকের মধ্যে চেপে বসে আছে, নির্বাচনি ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে, সব অর্জন ধ্বংস করে দিয়েছে… একে সরাতে না পারলে কিন্তু আমাদের স্বাধীনতা থাকবে না, আমাদের সার্বভৌমত্ব থাকবে না। আমাদের ভোটের অধিকার নেই, আমাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে দেখেন, ভারতবর্ষে ভোটের অধিকার আছে বলেই কিন্তু তারা অন্তুত এই যে মোদির (নরেন্দ্র মোদী) তিনবার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যে ক্ষমতায় যাওয়ার যে ইচ্ছা-ভাবনা সেইটাকে কিন্তু তারা (জনগণ) রোধ করে দিয়েছে। আজকে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা তারা পাচ্ছে না।
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ৫৪৩টি আসনের চূড়ান্ত ফলাফলে ২৪০টিতে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। ৯৯টি আসনে জয় পেয়েছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস।
বাংলাদেশে ভোটের অধিকার ফিরে পেতে আন্দোলনের বিকল্প নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ভোটাধিকারের সেই অবস্থাটা আমাদেরকে ফিরিয়ে আনতে হবে। মানুষজন ভোট দিয়ে যাতে তার নিজস্ব পছন্দমত প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারি তার ব্যবস্থা করতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আমরা মুক্ত করতে, তার চিকিসার ব্যবস্থা করতে পারি সেজন্য আমাদের সংগ্রাম-লড়াই করতে হবে, আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব যিনি নির্বাসিত আছেন মিথ্যা মামলায় তাকে ফিরিয়ে আনার লড়াই করতে হবে, সর্বোপরি দেশের মানুষকে মুক্ত করবার জন্য আমাদেরকে সংগ্রাম করতে হবে। এই সংগ্রাম-লড়াই আমার জন্য নয়, এখানে যারা মঞ্চে বসে আছেন তাদের জন্য নয়, এই সংগ্রাম দেশের মানুষকে মুক্ত করার জন্য।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, এই সংগ্রামের ডাকে সকলে সাড়া দিয়ে দল-মত নির্বিশেষে সবাই মিলে গণআন্দোলন সৃষ্টি করতে হবে যে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করতে সক্ষম হবো ইনশাল্লাহ।
জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে জাতীয়তাবাদী উলামা দলের উদ্যোগে দলের প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। উলামা দলের নতুন নেতৃত্বকে সারাদেশে সংগঠন শক্তিশালী করার নিদের্শনা দেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রধানমন্ত্রী কয়েকদিন আগে বলেছেন যে, সাদা চামড়ার লোকেরা নাকি তাকে বলেছে যে, এখানে কোনো একটা দেশের এয়ারবেইস বানাতে। অর্থাৎ সেখানে তাদের জঙ্গি বিমান নামবে এয়ার বেইস হিসেবে তারা ব্যবহার করবে আর বাংলাদেশের একটা অংশ চট্টগ্রাম এবং মিয়ানমারের একটা অংশ নিয়ে নতুন একটা খ্রিষ্টান রাষ্ট্র তৈরি করবার তারা চেষ্টা করছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমি গতকাল বলেছি, আজকেও আবার বলছি, প্রধানমন্ত্রীর উচিত হবে এই মুহুর্তে জনগণের কাছে তার প্রকৃত ব্যাখ্যা তুলে ধরা। কারা চাইছে এবং কেনো চাইছে? কেনো তা এতোদিন পরে প্রকাশ করছেন…… এটা আমরা জানতে চাই। কারণ এটা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন। আপনাদের হাতে স্বাধীনতা আর কোনভাবেই নিরাপদ না।
ভারতের সাথে বাংলাদেশের অভিন্ন ১৫৪টা নদীর হিস্যা, তিস্তা নদীর পানি বণ্টন সমস্যা, সীমান্ত হত্যা বন্ধের শেখ হাসিনার সরকারের ব্যর্থতার কথাও তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
উলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা কাজী মো. সেলিম রেজার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মাওলানা মোহা. কাজী আবুল হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম জামাল, আবদুল বারী ড্যানি, মাওলানা শাহ মো. নেসারুল হকসহ উলামা দলের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।