বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের ‘হৃদয়ের কথা’ লিখিত জানাতে বললেন প্রধান বিচারপতি
আদালত অবমাননার অভিযোগের বিষয়ে বিএনপিপন্থি সাত আইনজীবীর পক্ষে মৌখিক বক্তব্য উপস্থাপন করা হলে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, ‘এগুলো তো হৃদয়ের কথা বললেন। এটাই লিখিতভাবে দিন।’ আজ বুধবার (১২ জুন) আদালত অবমাননার বিষয়টি প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চে শুনানির দিন ধার্য ছিল।
আজ সাত আইনজীবীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন আদালতে বলেন, ‘সাত আইনজীবীর মধ্যে একজন সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী মারা গেছেন। অন্যরা এখানে উপস্থিত আছে। এরা সবাই আদালতের সম্মান ও মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এ ছাড়া আইনজীবী (বার) ও আদালতের মধ্যে খারাপ সম্পর্ক হোক, তা আমরা চাই না। কারণ, দিন শেষে আমরা এই আদালতে এসেই দাঁড়াই। তাই আদালতের মর্যাদা রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব।’
এ সময় প্রধান বিচারপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের উদ্দেশে বলেন, ‘যে কথাগুলো বললেন, তা তো আপনাদের হৃদয়ের কথা। কিন্তু আদালত অবমাননার অভিযোগের বিষয়ে কি কোনো লিখিত জবাব দিয়েছেন?’
তখন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘মাই লর্ড লিখিত দেওয়া হয়নি।’ তখন প্রধান বিচারপতি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের লাইন ‘হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল….’ উদ্ধৃত করে বলেন, ‘আপনারা আপনাদের হৃদয়ের কথা যা বললেন, তাই লিখিত আকারে দিন। আমরা বিষয়টি দেখব।’
একপর্যায়ে আপিল বিভাগ বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের এই মামলায় ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন এবং এ বিষয়ে আদেশের জন্য ২৫ জুলাই দিন ধার্য করেন।
আপিল বিভাগের দুজন বিচারপতি সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে এর আগে বিএনপিপন্থি সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে তলব করেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
যে সাত আইনজীবীকে সর্বোচ্চ আদালত তলব করেন, তারা হলেন—জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাবেক সভাপতি ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল (প্রয়াত) এ জে মোহাম্মদ আলী, ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নি, জাতীয়তবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সহসম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল।
আপিল বিভাগের দুজন বিচারপতি সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. নাজমুল হুদা গত বছরের ২৯ আগস্ট বিএনপিপন্থি সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদনটি করেন।