খাসি তুমি কার?
পবিত্র ঈদুল আজহার দিন দুপুরে ঈদের ছুটিতে বাড়ি যেতে না পারা শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য পাঁচটি খাসি দিয়ে আপ্যায়নের ঘোষণা দিয়েছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রশাসন। ঘোষণার পর সেটার বাস্তবায়নও হয়েছে। প্রশাসন আপ্যায়নের ঘোষণা দিলেও আয়োজন বাস্তবায়ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা। শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা প্রশাসনের অর্থায়নের বিষয়টি স্বীকার করলেও অন্যান্য নেতাকর্মীরা এই আয়োজনে প্রশাসনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে ফেসবুকে ট্রোল করছেন। তবে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে দেড় লক্ষাধিক টাকা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়, আর এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছে ছাত্রলীগ। এ ঘটনা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষার্থীদের আপ্যায়নের ‘খাসি আসলে কার?’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাস্তবায়নের দায়িত্ব পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে দেড় লক্ষাধিক টাকা নিয়ে ছয়টি খাসি কেনেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজি এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন। সেই মাংস এবং পোলাও রান্না করে সোমবার দুপুরে শিক্ষার্থীদের বিতরণও করা হয়। সঙ্গে কোমল পানীয় এবং একটি করে ডিম দেওয়া হয়।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়, ব্যানার টানিয়ে জবি শাখা ছাত্রলীগের উদ্যোগে ঈদের দিন শিক্ষার্থীদের আপ্যায়ন করা হয়েছে বলে পোস্ট দিচ্ছেন অনেক নেতাকর্মী।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘উপাচার্য মহোদয় আগেই শিক্ষার্থীদের জন্য আপ্যায়নের উদ্যোগ নিতে চেয়েছিলেন। সেজন্য ঈদ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে ক্যাম্পাসে থেকে যাওয়া শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের জন্য আপ্যয়নের ব্যবস্থা করা হয়। ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহায়তায় সুষ্ঠুভাবে তা বণ্টন করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগের ছেলেরা যথেষ্ট পরিশ্রম করেছে আয়োজনে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সার্বিক খোঁজ-খবর রাখা হয়েছে। রাতেও আমাদের সহকারী প্রক্টর নিউটন হাওলাদার ও মনির উপস্থিত থেকে দেখাশোনা করেছে।’
এবিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন বলেন, ‘ প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনার পক্ষ থেকে এমন একটি আয়োজন করার চিন্তাভাবনা আমরা অনেক আগেই করেছি। পরবর্তীতে উপাচার্যকে জানালে তিনি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি আবেদন করতে বলেন। আমরা আবেদন করি, প্রশাসন থেকে কন্ট্রিবিউশনও করা হয়, বাকি টাকা আমরা ম্যানেজ করি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে।
জবি ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজি বলছেন, আয়োজনে ছাত্রলীগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উভয়ই অর্থায়ন করেছে। তিনি বলেন, ‘আয়োজন আলহামদুলিল্লাহ ভালোভাবে হয়েছে। অর্থায়ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও করেছে। আমরা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও করেছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয় এই মহানুভবতার একটি কাজ করেছেন, আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই। সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। আয়োজনের দায়িত্বও শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়।’