সার্বভৌমত্ব চলে গেলে আমাদেরই বেশি ব্যথা লাগবে : ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের সার্বভৌমত্ব চলে গেলে আমাদেরই বেশি ব্যথা লাগবে। কারণ এ জাতির মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধিকার লড়াইয়ে আমরা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আওয়ামী লীগই মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে।
আজ বুধবার (১৯ জুন) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
‘সেন্টমার্টিন ইস্যুতে সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছে’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিরোধীদলের একটা ভাষা আছে। সরকার কীভাবে নতজানু হলো, সেটা একটু ব্যাখ্যা করে দিক বিএনপি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সেন্টমার্টিনে যে গুলিটা এসেছে, সেটা মিয়ানমার সরকার করেনি। এটা আরকান আর্মি নামের বিদ্রোহীরা করেছে। সেখানে যে জাহাজের কথা বলা হয়, সে জাহাজ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যখন রোহিঙ্গারা স্রোতের মতো বাংলাদেশে ঢুকেছিল তখনো অনেকে উসকানি দিয়েছিল। আমাদের আকাশসীমা কখনো কখনো অতিক্রম করা হয়েছে। আমরা ধৈর্যের সঙ্গে এগুলো মোকাবিলা করেছি। প্রধানমন্ত্রীরও নির্দেশ, আমরা যেন কোনো অবস্থাতেই যুদ্ধে না যাই। মিয়ানমার উসকানি দিলে আমরা তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করব। একটা সমাধান বের করব।আমরা যুদ্ধে জড়াব না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যদি যুদ্ধে জড়াতে চান, তাহলে উসকানির ফাঁদে আমরা পড়তে পারি। আমরা সরকারে আছি, আমাদের দায়িত্ব আছে, কর্তব্য আছে। সার্বভৌমত্ব চলে গেলে আমাদেরই ব্যথা লাগবে বেশি। কারণ এ জাতির মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধিকার লড়াইয়ে আমরা ওতপ্রোতভাবে জড়িত।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘সার্বভৌমত্ব ঠিক আছে। সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হলে, আলাপ-আলোচনার সময় পেরিয়ে যদি যায়। যদি সত্যিই তারা আক্রমণে আসে, তখন কী আমরা বসে থাকবো? আমরা বসে বসে আঙুল চুষবো? আমাদেরও পাল্টা জবাব দিতে হবে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে অনেক সমস্যা রয়েছে। আমরা সীমান্তে আছি, গুলি এসে লাগতে পারে, গুলির আওয়াজ আসতে পারে, এটাও সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন। যতদিন সম্ভব, শেষ পর্যন্ত আমরা আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যেতে চেষ্টা করব।’
প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন ইস্যুতে ‘ওয়ান টু ওয়ান’ আলোচনা হবে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলনে, ‘পুরো বিশ্বই এখন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। সব দেশের রাজনীতি এখন কঠিন ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় বিদেশি ফান্ডিং কমে এসেছে। আমাদের এখন শ্যাম ও কুল দুটিই রক্ষা করে চলতে হচ্ছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক আমাদের দেওয়া প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড়ে দেরি করছে। এটা আমাদের ভোগাচ্ছে। পুরো বিশ্বই এখন অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়েছে। সবাই ব্যয় সংকোচন করছে। সারা বিশ্বই এখন রণক্ষেত্র। বড়বড় দেশগুলো বিশ্বযুদ্ধের মহড়া দিচ্ছে। আমরাও এর শিকার হচ্ছি।’