ড. ইউনূসের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করতে পিটার হাসকে চিঠি
ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ঘিরে আইনি জটিলতা নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশি-আমেরিকানদের অলাভজনক প্ল্যাটফর্ম কমিটি ফর এ ডেমোক্রেটিক বাংলাদেশ। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ড. ইউনূসের কর্মচারীরা বেআইনিভাবে বকেয়া অর্থ আটকে রাখার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
চিঠিতে বলা হয়, ‘নিম্নআদালত দেখেছে ড. ইউনূস নিজের করও পরিশোধ করছেন না। তিনি দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ড. ইউনূস এখনও তার পরিণতির জন্য শেখ হাসিনাকে দোষারোপ করেন।’
প্ল্যাটফর্মটি মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে তাদের মতামত উপস্থাপনের জন্য অনুরোধ করেছে। সিনেটর হিলারি ক্লিনটন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পলিটিক্যাল ডেস্ককেও এই বার্তা পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে দাবি করা হয়, ড. ইউনূস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমর্থনের সুবিধাভোগী। এতে উল্লেখ করা হয়, তার ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি এবং গ্রামীণফোন ও গ্রামীণ ব্যাংকের মতো অন্যান্য উদ্যোগের লাইসেন্স প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দিয়েছে। এর প্রাথমিক মূলধনের জন্য ৫০০ কোটি টাকাও দিয়েছে।
কমিটি ফর এ ডেমোক্রেটিক বাংলাদেশের প্ল্যাটফর্মটির পক্ষে চিঠিতে আহ্বায়ক খালিদ হাসান লিখেছেন, ‘আমি মনে করি, ড. ইউনূসের অত্যধিক শক্তিশালী আমেরিকান লবি দেখে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট অভিভূত হয়েছিলেন। আমি মনে করি, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ড. ইউনূসের নিয়ন্ত্রণাধীন সব উদ্যোগের জাতিসংঘের নিরীক্ষা চাওয়া উচিত। শেখ হাসিনাকে হত্যার ৪৩টি প্রচেষ্টার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও সিআইএকে অবশ্যই জানতে হবে।’
চিঠিতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে চালানো গ্রেনেড হামলার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, ‘বিএনপিনেতা তারেক রহমান বিএনপি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন পরবর্তী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সংগঠকদের সমাবেশে নৃশংস গ্রেনেড হামলার ষড়যন্ত্র ও বাস্তবায়ন করেছেন। শেখ হাসিনা অলৌকিকভাবে রক্ষা পেয়েছেন।’
ওই হামলায় আওয়ামী লীগের প্রথম সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ৩১ জন নিহত হন। বেঁচে যাওয়া বেশিরভাগই গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করতেই এ হামলা চালানো হয়েছিল।
চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে পদক্ষেপের অভাব এবং হামলার বিষয়ে শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের নীরবতার সমালোচনা করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, ‘দুঃখজনকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তারা বিএনপি সরকারের পদত্যাগ চায়নি। বিস্ময়কর ছিল শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের নীরবতাও। তিনি গ্রেনেড হামলা চালিয়ে হত্যার নিন্দা করেননি, নিহতের পরিবার বা দলকেও সান্ত্বনা দেননি।’
কমিটি জোর দিয়ে বলেছে, জাতীয় উন্নয়ন ও আইনি সংস্কারের জন্য শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বহাল রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ২০০ বছর আগে আমেরিকার স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ের সঙ্গে তুলনাযোগ্য।
চিঠির শেষ অংশে বলা হয়, ‘বাংলাদেশকে অবশ্যই তার মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ প্রকাশ করতে হবে এবং ইসলামী মৌলবাদী ও সন্ত্রাসীদের লাগাম টেনে ধরতে হবে। শেখ হাসিনা আন্তরিকভাবে এই নীতি অনুসরণ করছেন। আমাদের অবশ্যই তাকে নির্বিঘ্নে কাজ করতে দেওয়া উচিত।’