কুমিল্লায় ইউনাইটেড হাসপাতাল সাময়িক বন্ধ ঘোষণা
অতিরিক্ত বিল আদায় ও লাইসেন্স হালনাগাদ না থাকায় কুমিল্লায় ইউনাইটেড হাসপাতালটি সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করেছে সিভিল সার্জন কার্যালয়। আজ রোববার দুপুরে এক রোগীর কাছ থেকে অতিরিক্ত বিল আদায়ের অভিযোগে হাসপাতালটিতে অভিযান পরিচালনা করে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের একটি দল।
এ সময় হাসপাতালের ল্যাব, জরুরি বিভাগ এবং কাগজপত্রে ত্রুটি ধরা পড়ে। দালালের মাধ্যমে সরকারি হাসপাতালের সামনে থেকে রোগী এনে এই হাসপাতালে ভর্তি করানোর অভিযোগও রয়েছে।
অভিযান পরিচালনার সময় হাসপাতালটিতে কোনো চিকিৎসক পাওয়া যায়নি। জরুরি বিভাগে চিকিৎসক পরিচয় দেওয়া এক ভুয়া ডাক্তারও ধরা পড়েন অভিযানে। হাসপাতালটি এর আগেও অনিয়মের অভিযোগে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সি ক্যাটাগরির এই হাসপাতাল কাগজপত্রে এ ক্যাটাগরির হাসপাতাল হিসেবে উল্লেখ করে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কুমিল্লা-লাকসাম সড়কের টমসমব্রিজের উত্তর পাশে দুতলা দালান ভাড়া করে গড়ে তোলা হয়েছে হাসপাতালটি।
অভিযোগ রয়েছে হাসপাতালটি দালাল নির্ভর। এ ছাড়া অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নাম ও মোববাইল নম্বর দিয়ে সাইন বোর্ড টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব সাইনবোর্ড সম্পর্কে জানেন না ডাক্তাররা। এ ছাড়া করোনার সময় মারা যাওয়া একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের সাইনবোর্ড এখনও টানানো রয়েছে এখানে।
ইউনাইটড হাসপাতালের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে দুজন রোগী ভর্তি। দুজনকেই দালালরা ফাঁদে ফেলে ধরে এনেছে। আরিফুল ইসলাম নামে অন্য রোগীর বিল দুই ঘণ্টায় ১৬ হাজার। আরিফুল ইসলাম পুরুষ হলেও তাঁর জেন্ডারের পাশে ফিমেল লেখা রয়েছে।
অভিযোগকারী রোগীর ছেলে আবুল কাশেম বলেন, হাসপাতালে কোনো যন্ত্রপাতি নেই। তাঁর কথায় হাসপাতালের ল্যাব ঘুরে দেখা যায় ল্যাবে কোনো যন্ত্রপাতি নেই। নষ্ট হওয়া কয়েকটি মনিটর টেবিলে রাখা হয়েছে। অন্ধকার স্যাঁতস্যাঁতে কেবিন। ময়লা আর দুর্গন্ধে ভেতরে প্রবেশ করা যায় না।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে হাসপাতালের এক ব্যক্তি জানান, দালাল রোগী এনে দিলে দুই হাজার টাকা দেওয়া হয়। সকালে আতর আলীকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এনে দেওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে দালালকে দুই হাজার টাকা পরিশোধ করে হাসপাতালের লোকজন।
অভিযানের নেতৃত্বদানকারী আদর্শ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আহমেদ মনজুরুল ইসলাম বলেন, জনস্বার্থে জন্য হুমকি বিবেচনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা মেনে হাসপাতালটির সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালটির লাইসেন্স হালনাগাদ নেই।