সাভারে ত্রিমুখী সংঘর্ষে মিলিটারি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীর মৃত্যু
ঢাকা জেলার সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষে রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে দেড়শতাধিক লোক।
নিহত শিক্ষার্থীর নাম সাঈখ আসহাবুল ইয়ামিন। তিনি রাজধানীর মিরপুর সেনানিবাসের মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর বাবা সাবেক ব্যাংকার মো. মহিউদ্দিন। দুই ভাইবোনের মধ্যে ইয়ামিন ছোট। বড় বোন সাঈখ আসহাবুল জান্নাত শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। সাভারে ব্যাংক টাউনে বসবাস করা ইয়ামিনের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়।
আজ দুপুরে আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অভিমুখে অগ্রসর হয়। তখন বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে থেমে থেমে সংঘর্ষে জড়ায় পুলিশ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও।
এ দিকে সকাল থেকেই উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ছিল বন্ধ। গতি কমিয়ে দেওয়া হয় ব্রডব্যান্ড লাইনের। দুপুরে পুলিশের বাধা পেয়ে শিক্ষার্থীরা সড়কে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের থেমে থেমে সংঘর্ষ এবং ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়ায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করেও পরিস্থিতি শান্ত করতে পারেনি। এভাবে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে সাভারের শিমুলতলা, রেডিও কলোনি ও ব্যাংক কলোনি এলাকায়।
বেলা পৌণে ৩টার দিকে একে একে গুলিবিদ্ধদের নেওয়া হয় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে আহত শিক্ষার্থী, পথচারী ও উৎসুক জনতার ভিড়ে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে দেখা যায় কর্তব্যরত চিকিৎসকদের।
বেলা পৌনে ৩টার দিকে একটি অটোরিকশায় করে গুলিবিদ্ধ গুরুতর আহত শিক্ষার্থী সাঈখ আসাবুল ইয়ামিনকে এনাম মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মিজারুল রেহান পাভেল ও ডা. হাসান মাহবুব ওই যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বুকে অসংখ্য রাবার বুলেট বিদ্ধ হওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।’
এ বিষয়ে পুলিশের দায়িত্বশীল কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সাভারে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছে।