বিএনপি সব অন্যায়-সন্ত্রাসকে প্রতিহত করবে : মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের সুস্পষ্টভাবে বলা আছে যে, সর্বক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা যারা ভন্ডুল করবে তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে এবং ভন্ডুলকারীদেরকে এখন যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আছে তাদের হাতে তুলে দিতে হবে। এ ব্যাপারে আমরা কোনোরকম বিশৃঙ্খলা সহ্য করব না। বিএনপি সমস্ত অন্যায়কে প্রতিহত করবে, সন্ত্রাসকে তারা প্রতিহত করবে এজন্য সমস্ত দল ও অঙ্গসংগঠন এক সাথে কাজ করবে।
দলটির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পাঁচ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। আজ বুধবার (২১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথ সভা শেষে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল।
যৌথ সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছে। আজকে ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এজন্য আমি ছাত্র-জনতা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখন আমাদের সামনে কিন্তু বড় সংগ্রাম বড় লড়াই। সেই লড়াইটা কি? এই বিপ্লবের বিজয়কে সুসংহত করা। এই বিজয়কে যদি আমরা সুসংহত করতে না পারি আবার কিন্তু নব্য ফ্যাসিবাদ এসে হাজির হবে, এটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে।
কোনো বিশৃঙ্খলা বিএনপি সহ্য করবে না হুঁশিয়ারি দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন জনগণকে নিজের দায়িত্ব নিয়ে আমাদের অর্জিত বিজয়কে সুসংহত করতে হবে। আজকে কেউ যদি সন্ত্রাস করতে চায়, কেউ যদি চাঁদাবাজি বা অন্য কিছু করে ক্ষতি করতে চায় সেটা আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে রুখে দিতে হবে, প্রতিরোধ করতে হবে।
বিএনপির দীর্ঘ যাত্রাপথে দলটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বর্তমান চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলের বিশাল ব্যাপ্তি ও বিস্তারের কথা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে যৌথ সভায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আবদুস সালাম আজাদ, কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জমান মিল্লাত, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহ দপ্তর সম্পাদক তারিকুল ইসলাম তেনজিং উপস্থিত ছিলেন।
অঙ্গসংগঠনের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগর উত্তর বিএনপির সাইফুল আলম নিরব, দক্ষিণের তানভীর আহমেদ রবিন, যুবদলের মোনায়েম মুন্না, নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, রাজিব আহসান, মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, উলামা দলের মাওলানা কাজী মো. সেলিম রেজা, মাওলানা কাজী মোহাম্মদ আবুল হোসেন, জাসাসের হেলাল খান, জাকির হোসেন রোকন, মৎস্যজীবী দলের আব্দুর রহিম, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মজিবুর রহমান, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, মঞ্জরুল ইসলাম মঞ্জু, ছাত্রদলের রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ।
পাঁচদিনের কর্মসূচি
কর্মসূচিতে বলা হয়েছে, আগামী ৩১ আগস্ট মহানগর-জেলায় আলোচনা সভা হবে। তবে ঢাকার স্থান পরে জানানো হবে। ১ সেপ্টেম্বর সকালে কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশের কার্যালয়গুলোতে দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ১১টায় শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে ফাতেহা পাঠ ও পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিএনপির উদ্যোগে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাসের আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ২ সেপ্টেম্বর মহানগর, জেলা ও উপজেলায় শোভাযাত্রা, ৩ সেপ্টেম্বর মহানগর, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে মৎস্য অবমুক্তকরণ এবং ৪ সেপ্টেম্বর সারাদেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি।
এছাড়া দিনটি উপলক্ষে দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন আলোচনা সভার আয়োজন করবে। এগুলো কবে কখন কোথায় হবে তার স্থান ও সময়সূচি পরে জানানো হবে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির বাইরে সকল জেলা ইউনিট ও অঙ্গসংগঠনগুলো কর্মসূচি পালন করবে নিজেদের মতো করে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দল ও অঙ্গসংগঠনগুলো পোস্টার ও বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে।
১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদীদের ‘যূথবদ্ধ শক্তিমঞ্চ’হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন।