ফুঁসে উঠেছে গোমতী, পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপরে
অব্যাহত বৃষ্টি ও ভারত থেকে ধেয়ে আসা পানির ঢলের কারণে ক্রমেই ফুঁসে উঠেছে কুমিল্লার গোমতী নদী। আজ বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকাল ৭টার দিকে পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গোমতী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কামারখাড়া এলাকায় বাঁধে ফাটল দেখা দেওয়ায় সেঁচের পানি উত্তোলন লাইন দিয়ে প্রচণ্ড বেগে পানি এলাকায় প্রবেশ করতে শুরু করে। এতে আতঙ্কিত হয়ে নিম্নাঞ্চলের পাঁচ শতাধিক পরিবার বেড়িবাঁধের ভেতরের এলাকায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আলেখারচর ব্রিজের উত্তর অংশে কামাড়খারায় বাঁধে পানি উত্তোলন লাইন ফেটে পানি ঢুকছে। এ সময় স্থানীয়রা মাটিভর্তি বস্তা দিয়ে বাঁধ মেরামত করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহ এনামুল হক সোহেল জানান, ‘গত দুই দিন ধরে বেড়িবাঁধের অবস্থা খারাপ। সকালে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। এ সময় কামাড়খাড়া অংশে ফাটল দেখা দেয়।’
আরেক বাসিন্দা আবদুল মিয়া জানান, তার মতো সবাই ঘর থেকে গরু-ছাগল নিয়ে বের হয়ে গেছেন।
গৃহবধূ আইরিন আক্তার জানান, সারা রাত আতঙ্কে পার করেছেন। সকালে বাঁধে ফাটল ধরে। তার শাশুড়ি আতঙ্কে হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
অপর বাসিন্দা আনিসুর রহমান জানান, তার মাছের ঘের রয়েছে। টানা তিন রাত নির্ঘুম কাটিয়েছেন। কখন নদী ভেঙে পানিতে তার ঘের ভেসে যায়, তা নিয়ে দুশ্চিন্তার অন্ত নেই।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, ‘বাঁধ রক্ষায় সেনাবাহিনী, জেলা প্রশাসন, পাউবো, উপজেলা প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দরা কাজ করছেন।’
খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান আরও বলেন, ‘বাঁধের বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ অংশ দিয়ে গতকাল থেকে লোকালয়ে কিছু পানি প্রবেশ করছে। যেখান থেকেই আমরা খবর পাচ্ছি স্থানীয় জনগণের সহায়তায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি।’
কুমিল্লা জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী বলেন, জেলায় বুধবার পর্যন্ত ১৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আজ (বৃহস্পতিবার) আরও কয়েকটি খোলা হতে পারে। বন্যা দুর্গতদের চাল ও শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।