হাইকোর্টের আদেশ বহাল, সাতদিন বন্ধই থাকছে সময় টিভির সম্প্রচার
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভির সম্প্রচার সাতদিন বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
আজ রোববার (২৫ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্ব ছয় সদস্যর বেঞ্চ হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত না করে ২৭ আগস্ট আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন। এতে করে আগামীকাল সোমবার পর্যন্ত সম্প্রচার বন্ধ সাতদিন হয়ে যাবে। পরে মূল আপিল শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
আদালতে সিটি গ্রুপের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করীম। আহমেদ জোবায়েরের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
এর আগে গত ১৯ আগস্ট বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভির সম্প্রচার সাত দিনের জন্য বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। পরে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করলে গত ২১ আগস্ট চেম্বার আদালত আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য আজ রোববার দিন ধার্য করেন।
সময় টিভির এমডি ও সিইও পদ থেকে আহমেদ জোবায়েরকে অপসারণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটের শুনানি শেষে গত সোমবার (১৯ আগস্ট) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
সময় টিভির মাধ্যমে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু সংবাদ পরিবেশন ও সম্প্রচার নিশ্চিতে নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে সময় মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে শম্পা রহমান গত ১৪ আগস্ট আদালতে আবেদন করা হয়। ওই রিটে সময় টিভির এমডি ও সিইও পদ থেকে আহমেদ জোবায়েরকে অপসারণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
জানা যায়, গত ১০ আগস্ট গুলশানের সিটি হাউজে সময় মিডিয়া লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভায় নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নির্ধারণ করা হয়। এতে বলা হয়, সভায় পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সময় টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে আহমেদ জোবায়েরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, একই সভায় পরিচালক শম্পা রহমানকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সময় মিডিয়া লিমিটেডের সব কার্যক্রম এখন থেকে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নির্দেশনায় পরিচালিত হবে। পরে এ অব্যাহতির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের কোম্পানি বেঞ্চে আবেদন করেন আহমেদ জোবায়ের।
২০০৯ সালে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা সময় টেলিভিশন পরীক্ষামূলক সম্প্রচার শেষে ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল বাণিজ্যিক সম্প্রচারে আসে। লাইসেন্স নেওয়ার সময় তৎকালীন মন্ত্রী কামরুল ইসলামের ভাগনে আহমেদ জোবায়েরের নামে ৯৩ শতাংশ শেয়ার ছিল। ব্যবসায়িক ও পারিবারিক সূত্রের তথ্যমতে, এর মধ্যে ৯০ শতাংশ শেয়ার কামরুল ইসলামের হলেও কাগজে কলমে তা ছিল আহমেদ জোবায়েরের নামে। অন্য অংশীদারদের মধ্যে কামরুল ইসলামের ভাই মোরশেদুল ইসলামের ৩ শতাংশ এবং নিয়াজ মোরশেদ ও তুষার আবদুল্লাহর ২ শতাংশ করে শেয়ার ছিল। এরপর দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী সিটি গ্রুপ সময় টেলিভিশনে ৬৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। তাদের কাছে ৭৫ শতাংশ শেয়ার ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ জোবায়েরের মাধ্যমে মন্ত্রী কামরুলের পরিবারের কাছে থেকে যায়। পরে তুষার আবদুল্লাহ সময় টিভি ছেড়ে যান।