প্লাস্টিক বন্ধে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে পাইলট প্রকল্প নিয়েছে সরকার : পরিবেশ অধিদপ্তর
পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আব্দুল হামিদ বলেছেন, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বন্ধে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে হাতে নিয়েছে সরকার। দ্বীপটির পরিবেশ রক্ষায় পর্যটক আগমন সীমিত করার পাশাপাশি পর্যটকদের রেজিস্ট্রেশন বা অনুমতির বিষয়টিও কার্যকর করার পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করি সবার সহযোগিতায় দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত সেন্টমার্টিনে ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বন্ধে পরামর্শক সেমিনারে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক একথা বলেন।
আব্দুল হামিদ বলেন, সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিত করে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি সেখানকার মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য কাজ করা হবে। দ্বীপটির পরিবেশ রক্ষায় অনেক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্য পর্যটক আগমন সীমিত করার পাশাপাশি সেন্টমার্টিন্স দ্বীপে পর্যটকদের রেজিস্ট্রেশন বা অনুমতির বিষয়টিও কার্যকর করার পরিকল্পনায় রয়েছে। পরিবেশের সঙ্গে পর্যটনের সাংঘর্ষিক কোনো বিষয় নেই। সাংঘর্ষিক তখনই হয়, যখন ব্যাপকভাবে পরিবেশ ধ্বংসের কার্যক্রম চালানো হয়।
পাহাড় কাটা ও জলাশয় ভরাটে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার নির্দেশে ইতোমধ্যে পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স শুরু গেছে। কারণ যে শহরের বাতাস ভালো থাকবে, সে শহরের মানুষও ভালো থাকবে।
সভায় বক্তব্য দেন, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) আতাউল গনি ওসমানী, ইউএনআইডিও এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. জাকি উজ জামান, পরিবেশ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের পরিচালক সোলায়মান হায়দার, কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা সারওয়ার আলম, উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন সরকার ও পরিবেশ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক জমির উদ্দিন।
এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থানীয় পরিবেশ সংগঠনের প্রতিনিধিরা সভায় বক্তব্য দেন।
উল্লেখ, পর্যটকরা সেন্টমার্টিনে গিয়ে যেখানে-সেখানে ময়লা-আর্বজনা ফেলছে, পরিবেশ নষ্ট করছে, রাতের বেলা দ্বীপ আলোকিত করে গান-বাজনা করছে। এতে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন তার সৌন্দর্য হারাচ্ছে।
সেন্টমার্টিন্স দ্বীপে আট হাজারের বেশি স্থানীয় বাসিন্দা রয়েছে। তাদের অধিকার এবং প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের সৌন্দর্য রক্ষায় ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সেন্টমার্টিনের পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় পর্যটক আগমন সীমিত করার পাশাপাশি দ্বীপ ভ্রমণে পর্যটকদের কাছ থেকে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন বা অনুমতি এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ ফিও আদায়ের বিষয়টি জানিয়েছিল কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের সর্বদক্ষিণে অবস্থিত দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। কক্সবাজার জেলা শহর থেকে এর দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার। ১৭ বর্গকিলোমিটারের ক্ষুদ্র দ্বীপকে স্থানীয়রা বলে নারিকেল জিঞ্জিরা। দ্বীপটি একটু একটু করে তার সৌন্দর্য হারাচ্ছে। তাই দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার্থে এমন প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার দীপংকর বর আজ বৃহস্পতিবার রাতে জানিয়েছেন, সেন্টমার্টিনে যেতে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি মন্ত্রণালয়।