গাইবান্ধায় সাবেক এমপি কালামসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলার অভিযোগে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও গাইবান্ধা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন ঢাকা তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থী মো. মামুন খান। তিনি গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বুজরুক বোয়ালিয়া (হীরকপাড়া) গ্রামের বাসিন্দা।
গোবিন্দগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সাইদুর রহমান সরকার মামলাটি তদন্ত করছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন—উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) আতাউর রহমান বাবলু, সাবেক মেয়র মুকিতুর রহমান রাফি, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিয়া আসাদুজ্জামান হিরু, উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ফরহাদ আকন্দ, পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শাহিন আকন্দ, কামারদহ ইউপি চেয়ারম্যান তৌকির হাসান রচি, ইউপি সদস্য মিন্টু মিয়া, উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাদ্দাম হোসেন, যগ্ম আহ্বায়ক বাবুল ইসলাম, পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক রাশেদুল ইসলাম মাবিয়ার, জাহিদ ইসলাম, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসানুল শেখ সুমন, পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রেজা, রাফসান জানি স্বর্নাভ, উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য মাজেদুল ইসলাম মাহিন, ওয়ালিদ হাসান, উপজেলা শেখ রাসেল শিশু-কিশোর পরিষদের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ, সাধারণ সম্পাদক সাগর ইসলাম, উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য মুন্না খন্দকার, জীবন মন্ডল, তালুককানুপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লিখন সরকার প্রমুখ।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদী মামুন খান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। সারা দেশের মতো গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জেও কোটা সংস্কার আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। গত ১৭ জুলাই বিকেল ৪টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার সাফিয়া আছাব বিপিএড কলেজ মাঠ থেকে বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনের ডাকে ৭০০ থেকে ৮০০ ছাত্র-জনতা একটি মিছিল নিয়ে শহরের ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক দিয়ে যাওয়ার পথে রাজমতি সুপার মার্কেটের সামনে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এজাহারনামীয় আসামিরা এবং ১৫০ থেকে ২০০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি লাঠি, লোহার রড, দেশীয় পিস্তল, রাম-দা, চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি, বার্মিজ চাকু, হকিস্টিক, ইট ও পাথরের টুকরা ভর্তি চটের ব্যাগ নিয়ে অতর্কিতভাবে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের নির্দেশে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুলের নেতৃত্বে এজাহারনামীয় আসামিরা আন্দোলনকারীদের হত্যার উদ্দেশ্যে মামুন খান, তাসিন, বাঁধন, ওয়ারিদ, শ্রাবণ, আকাশ, ওমর ফারুক, আবিদ হোসেন, ইজাজসহ কয়েকজনের ওপর হামলা করে।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ ফ ম আছাদুজ্জামান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থী বাদী হয়ে ৪৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১৫০ থেকে ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেছে। মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে, সরকার পতনের পর তাদের কেউই এলাকায় নেই। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।’