ফেসবুকে ইসকনের পক্ষে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার পোস্ট, সমালোচনার ঝড়
মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সন্দীপন মজুমদার আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) পক্ষে নিজের ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে উপজেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। এতে তিনি চরম তোপের মুখে পড়ে পোস্টটি ডিলেট দিয়ে দেন। আজ শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) তিনি নতুন পোস্ট দিয়ে দেশবাসীর ক্ষমা চেয়েছেন।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন মৎস্য কর্মকর্তা সন্দীপন মজুমদার। তাতে তিনি যা লিখেন তা হুবাহুব তুলে ধরা হলে, “জঙ্গি সংগঠন হলেও নিম্নোক্ত কাজগুলো করে (আর্ত মানবতার মহান সেবায় ব্রতী হয়ে) কেন -
১) রোজায় রোজাদারদের ইফতারি দেয় ২) ঈদে গরিবদের নতুন কাপড়চোপড় দেয় ৩) বন্যায় বন্যা দুর্গতদের সহায়তা দেয়। এরপরও যদি নিষিদ্ধ করা লাগে, করেন। আপনাদের ‘যা ভালো লাগে’ করে যান। জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন ‘নিষিদ্ধ করেই, আগের মতো কারো পতন না হয়ে যায়, আবার, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আইনজীবী সাইফুলকে হত্যা করে এক ঢিলে দুই পাখি মারার ম্যাটিকুলাস ডিজাইন হিসাবে হিন্দুদের উপর চালিয়ে দেবার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে সিসিটিভি ফুটেজ সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার কারণে।
সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী ৪ জন শিবির ও ১ জন সমন্বয় গ্রেফতার হয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা আফ বি আই, সি আই এ সহ আমেরিকার সব গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড ইসকন সদস্য, তাদের ভাই সমতুল্য চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে এরেস্ট করে খুব সুবিধা করতে পারবে না।”
এ স্ট্যাটাসটি সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সন্দীপন মজুমদার বেশ কিছু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে ট্যাগও করেন।
একজন সরকারি কর্মকর্তার করা এমন স্ট্যাটাসকে সরকারি চাকরি আচরণবিধির লঙ্ঘন বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বিষয়ে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সন্দীপন মজুমদারকে সতর্ক করাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন বলে জানান।
মৎস্য কর্মকর্তা সন্দীপন মজুমদারের পোস্টটি নিয়ে উপজেলাজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠলে ফেসবুকে করা বিতর্কিত ওই স্ট্যাটাসটি ডিলিট করে দেন। এবং নতুন করে ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার এক স্ট্যাটাসে লিখেন,‘গত পরশুদিন রাতে ইসকনের কাজ কাম, এটাকে নিষিদ্ধ করা ও এটাকে কে কি করবে এসব নিয়ে যে পোস্টটি করেছিলাম তা অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে প্রকাশিত হয়ে গেছে। এতে যদি কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে তা আমার ইচ্ছাকৃত নয়। এটা আমার ভুলে ও অনিচ্ছায় হয়েছে। আমি এর জন্য ক্ষমা প্রার্থী ও সবার কাছে মাফ চাচ্ছি। আর উক্ত পোস্টটি ডিলিট করেও দিয়েছি।’
এ বিষয় জানতে চাইলে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সন্দিপন মজুমদার বিষটি এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ বলেন, বিষয়টি আমার নজরে এলে আমি তাকে ডাকি। পরে তিনি আমার সামনে ওই স্ট্যাটাসটি কেটে নতুন করে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাস দেন। যেহেতু তিনি মৎস্য অধিদপ্তরের অধীনে, তাই আমি তাঁর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি।