আদালত চত্বরে সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র কিরণকে পচা ডিম, জুতা নিক্ষেপ
হত্যাসহ বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার করা মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণকে আদালতে তোলা হয়েছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা কিরণের ওপর ও তাকে বহনকারী পুলিশের প্রিজনভ্যানে পচা ডিম, টমেটো, ঝাড়ু ও জুতা নিক্ষেপ করে। এ সময় তার ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ করে তারা।
আজ রোববার (৮ ডিসেম্বর) গাজীপুরে জেলা আদালত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আজ সকালে মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৫ এ হাজির করা হয় আসাদুর রহমান কিরণকে। এরপর আদালতের বিচারক ইকবাল হাসান তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালতের পরিদর্শক আহসান উল্লাহ চৌধুরী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ও হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা ৯টি মামলায় আওয়ামী লীগনেতা ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলাগুলো মহানগরীর বাসন, কাশিমপুর, কোনাবাড়ি, সদর ও রাজধানীর উত্তরা থানায় করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, কিরণকে আদালতে হাজির করার খবর মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুদ্ধ লোকজন আদালত এলাকার হাজতখানার আশপাশে জড়ো হতে থাকে। তাকে আদালতে হাজির করার পর হাজতখানায় নেওয়া হয়। পরে কারাগারে নেওয়ার জন্য হাজতখানা থেকে প্রিজনভ্যানে তোলার সময় বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে কিরণের মাথায় থাপ্পড় দেয় এবং তাঁকে লক্ষ করে পচা ডিম, টমেটো ও জুতা নিক্ষেপ করে। তারা প্রিজনভ্যানে ঝাড়ু দিয়ে আঘাত করে। এ সময় তারা ‘খুনি কিরণের ফাঁসি চাই’ বলে স্লোগান দেয়। এ সময় পুলিশ নিরাপত্তাজনিত কারণে দ্রুত তাঁকে প্রিজনভ্যানে উঠিয়ে কারাগারের উদ্দেশে আদালত এলাকা ত্যাগ করে।
গত ১৮ নভেম্বর রাতে অবৈধপথে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় আসাদুর রহমান কিরণকে যশোরের শার্শা উপজেলার শিকারপুর সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করেন বিজিবি সদস্যরা। তিনি গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। সিটি নির্বাচনে একাধিকবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। সিটির দুই মেয়াদে পাঁচ বছরের অধিক সময় তিনি ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্বও পালন করেন।
আসাদুর রহমান কিরণ ২০১৩ সালের গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নান কারাগারে থাকাকালীন আড়াই বছর এবং পরবর্তী সময়ে ২০২১ সালে মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করার পর ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও ভূমি দখল করার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের উপর বিভিন্ন সময় হামলা-মামলার পেছনে তাঁর ইন্দন ও হাত রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।