বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক চায় ভারত : বিক্রম মিশ্রি
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সুসম্পর্ক চায় তার দেশ ভারত। আজ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেছেন বিক্রম মিশ্রি।
এর আগে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় প্রায় দুই ঘণ্টার এই বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন বাংলাদেশের এবং ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি তাঁর দেশের নেতৃত্ব দেন। প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকের আগে দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব একান্তে বৈঠক করেন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি আজ সকালে ঢাকায় বিশেষ ফ্লাইটে অবতরণ করেন। এরপর বেলা ১১টার দিকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের গাড়ি বহর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় প্রবেশ করে। আনুষ্ঠানিক আলোচনার আগে দুই পররাষ্ট্র সচিব একান্তে বৈঠক করেন। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে এটি বিক্রম মিশ্রির প্রথম বাংলাদেশ সফর।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। গত ৫ আগস্টে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এটাই আমাদের উভয় দেশের নেতাদের মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক। এর আগে শীর্ষনেতাদের মধ্যে টেলিফোন আলাপ হয়েছে। নিউইয়র্কে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়েও বৈঠক হয়েছে। আমার এ সফর তারই অংশ।’
বৈঠকের বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, ‘আমাদের মধ্যে খোলামেলা এবং গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। আমাদের আকাঙ্ক্ষা হলো-ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং পারস্পরিক ও লাভজনক সম্পর্ক, যেটা বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে আমরা অতীতে দেখেছি ও আমরা ভবিষ্যতেও এটা দেখতে চাই। এই সম্পর্ক হবে পিপল টু পিপল। এটা হলেই আমাদের উভয় দেশ উপকৃত হবে।’
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য, বিদ্যুৎ, পানি, এনার্জি, উন্নয়ন সহযোগিতা, কনস্যুলার সহযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে যোগাযোগ রয়েছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আরও এগিয়ে যাবো।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দুই দেশের মধ্যে কিছু দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি। ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক এবং কূটনৈতিক বিষয়ে আক্রমণের বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমরা সার্বিকভাবে উভয়পক্ষের মধ্যে গঠনমূলক মনোভাব চাই।’ একটা ইতিবাচক এবং গঠনমুলক সম্পর্কের দিকে দুই দেশ এগিয়ে যাবে বলেও জানান ভারতের পররাষ্ট্র সচিব।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে ঢাকায় এটিই হচ্ছে দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রথম বৈঠক। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে উভয়পক্ষ রাজনৈতিক দূরত্ব কমানোর বিষয়ে জোর দিয়েছেন। ঢাকার পক্ষ থেকে ভারতে বসে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সক্রিয়তা বন্ধ, ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার ও ভিসার জট খোলার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।