চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
ঋণের শর্ত শিথিলসহ সুদহার কমানো ও পরিশোধের সময় বাড়ানোর বিষয়ে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ আলোচনা করবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমাদের দেশের অনেক প্রকল্পে তাদের বিনিয়োগ আছে। সেগুলো প্রধানত ঋণভিত্তিক। কিছু প্রকল্প চলমান আছে। আমাদের আরও কিছু বিষয় আছে। এর মধ্যে ঋণের শর্তাবলি নিয়ে আমরা কথাবার্তা বলব। যেমন ঋণের সুদের হার কমানো এবং পরিশোধের সময় বাড়ানোর বিষয়ে কথা বলব।’
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সচিবালয়ে আসন্ন চীন সফর নিয়ে ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ বলেন, ‘আমরা চাইব যখন এলডিসি থেকে গ্রাজুয়েট করবে বাংলাদেশ তখন চীন যেন ইউরোপের মতো আগামী তিন বছর আমাদের কোটা ও শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়। তবে এখনো চীন আমাদের সব পণ্যেই শুল্কমুক্ত সুবিধা দিচ্ছে। আমাদের গ্রাজুয়েশনের পরে তাদের কাছে থেকে আলাদাভাবে সেই সুবিধাটা নিতে হবে।’
মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, এই সফরে আলোচনায় প্রাধান্য পাবে অর্থনৈতিক বিষয়। এরমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো ব্যবসা ও বাণিজ্য। অফিসিয়ালি চীন আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক বন্ধু। তবে ক্ষেত্র বিশেষে ভারতকে বড় ব্যবসায়িক অংশীদার বলা হয়। কারণ আনঅফিসিয়াল ব্যবসা আছে প্রচুর।
উপদেষ্টা বলেন, প্রধানত আমদানিভিত্তিক প্রচুর ব্যবসা আছে আমাদের। আমদানিগুলো এজন্য প্রয়োজনীয়, যা আমাদের রপ্তানির জন্য সেগুলোর ওপর নির্ভরশীল। এজন্য চীনের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ।
কালচারাল বিষয় উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চীন ও বাংলাদেশে কিছু অনুষ্ঠানের বিষয়ে আলোচনা হবে।
চীনের ৫ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তার প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে কথাবার্তা বলব। দেখি তারা কতটুকু সহায়তা দিতে পারে। যদি প্রকল্প ঋণ ত্বরান্বিত করা যায়, তাহলে সেটাও সুবিধা হতে পারে। আলোচনায় অর্থনৈতিক বিষয়াবলি আসবে। আর পাঁচ বিলিয়ন ডলারের আলোচনা আছে তা বহাল থাকবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘প্রকল্প ঋণের বিষয়ে কমিটমেন্ট ফি তুলে দেওয়া ও সুদহার নিয়েও আলোচনা করা হবে। বিভিন্ন প্রকল্প ঋণে সুদের হার ভিন্ন ভিন্ন হলেও সাধারণভাবে এটি কমানোর অনুরোধ করবে বাংলাদেশ। অর্থনীতির ওপর চাপ কমাতে প্রকল্প ঋণগুলো পরিশোধের সময়সীমা ১৫ থেকে ২০ বছরের পরিবর্তে বাড়িয়ে ৩০ বছর করার চেষ্টা করা হবে। আর কমিটমেন্ট ফি যাতে তুলে দেওয়া যায়, সেই চেষ্টা করব।’
গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট নিয়ে চীনের উদ্যোগের বিষয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, আলোচনা চলমান আছে, তা আমরা ইতিবাচক দৃষ্টিতেই দেখব। এটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে এখনি সমঝোতা স্মারক হবে কিনা, তা বলতে পারছি না।
বেইজিংয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। বেইজিং ও সাংহাইয়ে পৃথক গবেষণা সংগঠনে বক্তব্য দেবেন তিনি। এছাড়া কয়েকটি প্রযুক্তি কারখানা পরিদর্শনও করবেন তিনি।