জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন বাতিল
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগের কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখার জন্য জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০২৩ (২০২৩ সনের ৪০ নম্বর আইন) বাতিল করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশনের জাতীয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে গতকাল বুধবার নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার আহমেদের সই করা এনআইডি আইন-২০২৩ বাতিল করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে চিঠি পাঠানো হয়।
ইসি চিঠিতে জানায়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৯ (১) অনুসারে রাষ্ট্রপতি পদের ও সংসদের নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণের তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ ও অনুরূপ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত। পাশাপাশি, ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯ এর ধারা ১১ ও ভোটার তালিকা বিধিমালা, ২০১২ এর বিধি ৩(গ) এবং এতদসংক্রান্ত বিষয়ে উচ্চ আদালতের আদেশ অনুসারে ভোটার তালিকা প্রণয়নের ক্ষেত্রে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ অনুযায়ী, ধারাবাহিকভাবে প্রাথমিক স্তর থেকে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে ভোটার তালিকা প্রস্তুত, হালনাগাদসহ প্রাসঙ্গিক কার্যাদি নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত। বর্ণিত কার্যক্রম থেকে ফলাফল হিসেবে যে দুটি বিষয় পাওয়া যায় তা হচ্ছে; ক. ভোটার তালিকা ও খ. জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)।
ইসি জানায়, জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও একই ভোটার তালিকা ব্যবহার করা হয়। ২০২১ সালের ১৭ মে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের পরিবর্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যস্ত করার বিষয়ে তৎকালীন সরকার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর ওই বছরের ৭ জুন নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বরাবর পাঠানো পত্রের মাধ্যমে এনআইডি কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনে রাখার পক্ষে মতামত দেওয়া হয়। পরে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ বা আলোচনা না করেই ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ৩ নং আইন) বাতিলপূর্বক জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২৩ (২০২৩ সনের ৪০ নং আইন) প্রণয়ন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর ২০২৩ রুলস অব বিজনেস ১৯৯৬ এর অ্যালোকেশন অব বিজনেস অ্যামং ডিফারেন্ট মিনিস্ট্রিস অ্যান্ড ডিভিশনস-এ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের দায়িত্বগুলোর মধ্যে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো চিঠিতে আরও জানানো হয়, ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২৩ জারি করা হলেও আইনের ধারা ১(২) অনুযায়ী গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারির মাধ্যমে আইনটি কার্যকর করার শর্ত থাকলেও এখন পর্যন্ত তা করা হয়নি বিধায় ধারা ৩০(৩)- এর উপধারা ১(খ) অনুযায়ী জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন থেকে পরিচালিত হচ্ছে। ২০২৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২৩ বাতিল করতে এনআইডি কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের কাছে বহাল রাখার কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় বরাবর নির্বাচন কমিশন থেকে অনুরোধ করা হয়।