গ্রামীণফোনের ২৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন
গ্রামীণফোনের ২৫তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) হয়েছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এ বছর ধারাবাহিকভাবে তৃতীয়বারের মতো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বার্ষিক সাধারণ সভা পরিচালনা করে গ্রামীণফোন।
গ্রামীণফোনের কোম্পানি সচিব এস এম ইমদাদুল হকের পরিচালনায় আজ মঙ্গলবার ভার্চুয়াল এজিএমে অংশ নেন গ্রামীণফোনের বোর্ড চেয়ারম্যান ইয়র্গেন সি. অ্যারেন্টজ রোস্ট্রাপ ও প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমানসহ বোর্ড সদস্য এবং প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
গ্রামীণফোনের বোর্ড চেয়ারম্যান ইয়র্গেন সি. অ্যারেন্টজ রোস্ট্রাপ বলেন, ‘২০২১ সাল আমাদের জন্য বেশ শিক্ষণীয় এক বছর ছিল। পুরো বছর জুড়েই কোভিড-১৯-এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট উদ্ভুত নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের টিম বেশ দৃঢ় ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল; তাই তারা গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান কানেক্টিভিটি সল্যুশনের চাহিদা পূরণে সক্ষম হয়েছে। প্রতিকূল সময় সত্ত্বেও, টেকনোলজি সার্ভিস প্রোভাইডার ও ডিজিটাল বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি পার্টনার হিসেবে আমরা বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ, পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে উদ্ভাবন এবং কমিউনিটিকে সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনীয় নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য আমরা নেটওয়ার্ক ও তরঙ্গের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিনিয়োগ করেছি এবং অত্যাধুনিক ও ভবিষ্যৎ উপযোগী সক্ষমতাসম্পন্ন নেটওয়ার্ক অপারেটিং পার্টনার অন্তর্ভুক্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সচেষ্ট আছি। সবসময় গ্রামীণফোনের সঙ্গে থাকার জন্য সব অংশীদার, কর্মী ও গ্রাহকদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। একসঙ্গে আমরা সবকিছু সম্ভব করতে পারব।’
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বনির্ভর ডিজিটাল অর্থনীতির দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যপূরণে ভবিষ্যত প্রবৃদ্ধি, ভবিষ্যত উপযোগী সক্ষমতা তৈরি, পরিচালন মডেল ও অর্থপূর্ণ সামাজিক প্রভাব তৈরিতে ২০২১ সাল আমাদের জন্য ছিল ভিত্তিস্বরূপ। নেটওয়ার্ক ও অভিজ্ঞতার মান বৃদ্ধির ফলে গ্রাহক সংখ্যা ও সেবার ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে ২০২১ সালে প্রবৃদ্ধির গতিশীলতাসহ আমরা ইতিবাচক অর্থনৈতিক ফলাফল অর্জন করতে পেরেছি। গ্রাহক, অংশীজন ও শেয়ারহোল্ডারদের জীবনে ভ্যালু তৈরির মাধ্যমে আগামী দিনগুলোতে সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে ডিজিটাল বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি পার্টনার হিসেবে কাজ করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
গ্রামীণফোনের পরিচালনা পর্ষদ ২০২১ সালের জন্য পরিশোধিত মূলধনের ১২৫ শতাংশ হারে (অর্থাৎ ১০ টাকার শেয়ারে ১২.৫০ টাকা প্রতি শেয়ার) চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর ফলে, এ নগদ লভ্যাংশের পরে পরিশোধিত মূলধনের মোট লভ্যাংশের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫০ শতাংশ, যার মধ্যে রয়েছে পূর্ববর্তী ১২৫ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ, যা ২০২১ সালে কর পরবর্তী মুনাফার ৯৮.৯১ শতাংশ।
গ্রামীণফোনের হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন্স মুহাম্মদ হাসান ও করপোরেট কমিউনিকেশন্স ম্যানেজার তাজরিবা খুরশীদের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উন্নত কাভারেজ ও গ্রাহকদের প্রয়োজন অনুযায়ী উদ্যোগে গ্রহণে গ্রামীণফোনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কার্যক্রমগত দক্ষতা এবং সঠিক কৌশল নির্ধারণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গ্রাহকদের সেরা কানেক্টিভিটি অভিজ্ঞতা ও দেশের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধিকে এগিয়ে নিতে টেক সার্ভিস লিডার গ্রামীণফোন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃক আয়োজিত ফাইভজির তরঙ্গ নিলামে অংশ নিয়ে ২ দশমিক ৬ গিগাহার্টজ ব্যান্ডে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া ৬০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ ক্রয় করে। এ ছাড়াও, ডিজিটাল রূপান্তর ও পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করে গত ২৫ এপ্রিল গ্রামীণফোন গ্রাহকদের জন্য ই-সিম নিয়ে এসেছে। যাত্রা শুরুর পর থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক অবদান রেখে গ্রামীণফোনের পথচলার ২৫ বছর সম্পন্ন করেছে। এখন প্রতিষ্ঠানটি সামনের দিনগুলোতে দেশের মানুষের জীবনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে তাদের ধারাবাহিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রয়াসে কাজ করছে। কারণ, গ্রামীণফোন বিশ্বাস করে, ডিজিটাল কানেক্টিভিটির মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যাওয়ার এখনই সময়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, টেলিনর গ্রুপের অঙ্গসংগঠন গ্রামীণফোন ৮ কোটিরও বেশি গ্রাহক নিয়ে বাংলাদেশের অগ্রণী টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান। ১৯৯৭ সালে যাত্রা শুরু করার পর দেশব্যাপী সর্ববৃহৎ নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে গ্রামীণফোন, যার মাধ্যমে দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ সেবা গ্রহণ করতে পারে। ব্র্যান্ড প্রতিজ্ঞা ‘‘চলো বহুদূর’’ এর আওতায় গ্রামীণফোন, গ্রাহকদের জন্য সর্বোত্তম মোবাইল ডাটা, ভয়েস সেবা এবং সবার জন্য ইন্টারনেট প্রদানে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। গ্রামীণফোন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত।