বাংলাদেশের সবুজ বিনিয়োগে ২৫ কোটি ডলার অনুমোদন বিশ্বব্যাংকের
বাংলাদেশের পরিবেশ ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে এবং সবুজ বিনিয়োগে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে বৃহস্পতিবার ২৫ কোটি মার্কিন ডলারের অর্থায়ন অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক।
বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (বিইএসটি) প্রকল্প পরিবেশ অধিদপ্তরকে তার প্রযুক্তিগত ও প্রশাসনিক ক্ষমতা জোরদার করতে সহায়তা করবে।
বিশ্বব্যাংক অনুসারে, এই প্রকল্পটি দূষণ রোধ ও পরিবেশের গুণগত মান উন্নত করতে পরিবেশগত আইন-কানুন প্রয়োগের উন্নতিতেও সাহায্য করবে।
বিইএসটি অভীষ্ট খাতগুলোতে সবুজ বিনিয়োগের জন্য পরীক্ষামূলক নতুন অর্থায়নের পদ্ধতি চালু করবে, যা বায়ু দূষণ কমাতে সবুজ বিনিয়োগকে সমর্থন করার জন্য আর্থিক খাতকে উৎসাহিত করতে একটি গ্রিন ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমও চালু করবে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন বাংলাদেশকে প্রধান দূষণ সমস্যা মোকাবিলায় সাহায্য করবে। এতে বৃহত্তর ঢাকা ও তার বাইরে বসবাসকারী দুই কোটি ১০ লাখেরও বেশি মানুষ উপকৃত হবে।
বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ডান্ডান চেন বলেন, ‘বাংলাদেশের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও নগরায়ণ দূষণের ক্ষেত্রে অধিক প্রভাব ফেলছে। দূষণ শুধু যে আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলছে তা নয়, দেশের অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতার ক্ষমতাও নষ্ট করছে।’
ডান্ডান চেন আরও বলেন, ‘বিইএসটি দেশের দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও টেকসই উন্নয়নের জন্য কাজ করা পরিবেশ সংস্থাগুলোকে শক্তিশালী করবে। প্রকল্পটি বার্ষিক প্রায় ৪৬ হাজার যানবাহন পরিদর্শনের জন্য একটি বেসরকারি-সরকারি অংশীদার পদ্ধতি ব্যবহার করে চারটি যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র নির্মাণে সহায়তা করবে। বার্ষিক তিন হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ই-বর্জ্য প্রক্রিয়া করার জন্য একটি ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার যন্ত্র স্থাপন করা হবে।’
বিশ্বব্যাংক অনুসারে, প্রকল্পটি অভীষ্ট উৎস থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে সাহায্য করবে।
বিশ্বব্যাংকের জ্যৈষ্ঠ পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও প্রকল্পের টাস্ক টিম লিডার জিয়াং রু বলেন, ‘সংবাদপত্রে আমরা নিয়মিত ঢাকার উচ্চ মাত্রার বায়ু দূষণের প্রতিবেদন দেখি। বিশ্বব্যাংকের হিসেবে দেখা যায় যে ২০১৯ সালে বায়ু দূষণ ও সীসার প্রভাব বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর এক-পঞ্চমাংশেরও বেশির জন্য দায়ী, যা দেশের জিডিপির প্রায় ১২ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত করে।’
জিয়াং রু বলেন, ‘পরিবেশগত নিয়মনীতির কঠোর প্রয়োগ বেসরকারি খাতকে দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং সবুজায়ন বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করবে। এইভাবে দেশকে ২০৫০ সালের মধ্যে নেট-শূন্য গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে।’
প্রকল্পটি বাস্তব সময়ে ঢাকার নদী ও অভীষ্ট আন্তর্জাতিক নদীগুলোর পানির গুণগত মান পর্যবেক্ষণ শুরু করার জন্য ২২টি অবিচ্ছিন্ন ভূপৃষ্ঠের পানির গুণগত মান পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের একটি প্রথম নেটওয়ার্ক স্থাপন করবে।
এটি নির্বাচিত শিল্প বর্জ্য শোধনাগারগুলোর পরিবেশগত গুণ নিশ্চিত করার জন্য পানির গুণগত মান পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রও স্থাপন করবে।