হাকীমপুরী জর্দার মালিক কাউছ মিয়া এবারও সেরা করদাতা
হাকিমপুরী জর্দার স্বত্বাধিকারী এবারও সেরা করদাতা হয়েছেন। তিনি ২০২১-২২ করবর্ষে ‘সিনিয়র সিটিজেন বা বয়স্ক নাগরিক’ শ্রেণিতে এই ব্যবসায়ী সেরা করদাতার সম্মাননা পেয়েছেন। আগের কয়েক বছর অবশ্য তিনি ব্যবসায়ী শ্রেণিতে সেরা করদাতা নির্বাচিত হয়েছিলেন। গত বছর মুজিব বর্ষের সেরা করদাতাও হয়েছিলেন কাউছ মিয়া। তিনি ৬১ বছর ধরে কর দিয়ে আসছেন। ১৯৬৭ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানেও এক নম্বর করদাতা হয়েছিলেন কাউছ মিয়া।
গত ২০২১-২২ কর বছরের জন্য সিনিয়র সিটিজেন শ্রেণিতে কাউছ মিয়া ছাড়া আরও চারজন সেরা করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেন, ঢাকার কর অঞ্চল-৮-এর করদাতা খাজা তাজমহল, কর অঞ্চল-৩-এর করদাতা সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুর রহমান, বৃহৎ করদাতা ইউনিটের করদাতা এম সাহাবুদ্দিন আহমেদ ও কর অঞ্চল-৩-এর করদাতা প্রকৌশলী খন্দকার বদরুল হাসান।
২০২১-২২ কর বছরের জন্য পাঁচজন সিনিয়র সিটিজেনসহ সেরা করদাতা মোট ১৪১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এরই মধ্যে এ-সংক্রান্ত সরকারি গেজেটও প্রকাশ করা হয়েছে। সেরা করদাতাদের আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা ও ট্যাক্স কার্ড দেবে এনবিআর।
২০১৯ সালে এনবিআরের এক অনুষ্ঠানে কাউস মিয়া বলেছিলেন, ‘আগে টাকাপয়সা এখানে-সেখানে রাখতাম। এতে নানা ঝামেলা ও ঝুঁকি থাকত। ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দিয়ে ফ্রি হয়ে গেলাম। এরপর সব টাকাপয়সা ব্যাংকে রাখতে শুরু করলাম। হিসাব-নিকাশ পরিষ্কার করে রাখলাম।’
কাউছ মিয়া ১৯৩১ সালের ২৬ আগস্ট চাঁদপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পূর্বপুরুষরা তৎকালীন ত্রিপুরা রাজ্যের অধিবাসী ছিলেন।
১৯৪৫ সালে অষ্টম শ্রেণি পাস করে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হলে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের দামামায় আর পড়াশোনা এগোয়নি তাঁর। কিশোর বয়সেই চাঁদপুর শহরে ব্যবসায়ী হিসেবে পেশাজীবন শুরু করেন।
কাউস মিয়ার বাবা চাইতেন না তিনি ব্যবসা-বাণিজ্যে নামেন। তিনি চাইতেন তিনি পড়াশোনা চালিয়ে যান। বাবার অনিচ্ছা সত্ত্বেও তিনি মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ১৯৫০ সালে চাঁদপুরের পুরান বাজারে মুদিদোকান দেন। এরপর ধীরে ধীরে ১৮টি ব্র্যান্ডের সিগারেট, বিস্কুট ও সাবানের এজেন্ট হন। পরের ২০ বছর তিনি চাঁদপুরেই ব্যবসা করেন।
১৯৭০ সালে নারায়ণগঞ্জে চলে আসেন এবং তামাকের ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে ৪০-৪৫ ধরনের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কাউস। তবে তাঁর মূল ব্যবসা তামাক বেচাকেনা। রংপুরে তামাক কিনে সেখানেই বিক্রি করেন। একবার তিনি আমদানির ব্যবসায় নামতে লাইসেন্স নিয়েছিলেন।
কাউছ মিয়ার ভাষ্যমতে, এ ব্যবসায় কারসাজি না করলে টিকে থাকা মুশকিল—এটা চিন্তা করে আমদানির ব্যবসা ছাড়েন তিনি।