বাজেট
আয় আড়াই লাখ টাকার ওপর হলে দিতে হবে কর
প্রস্তাবিত বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা দুই লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিরাজমান মূল্যস্ফীতি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, প্রান্তিক করদাতাদের করভার ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় এ প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, নারীর ক্ষমতায়ন এবং দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাদের অধিকতর সম্পৃক্ততাকে উৎসাহ দিতে এবং জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের করভার কমানোর লক্ষ্যে মহিলা করদাতা ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকদের করমুক্ত আয়সীমা দুই লাখ ৭৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ টাকায় নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তিনি জানান, প্রতিবন্ধী করদাতাদের প্রতি সমাজের এবং রাষ্ট্রের পালনীয় ভূমিকা বিবেচনায় প্রতিবন্ধী করদাতাদের করমুক্ত আয় সীমা তিন লাখ ৫০ হাজার টাকার পরিবর্তে তিন লাখ ৭৫ হাজার টাকায় নির্ধারণের প্রস্তাব করা হচ্ছে। এ ছাড়া মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের করমুক্ত আয়ের সীমা চার লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে চার লাখ ২৫ হাজার টাকায় নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
আয়কর
অর্থমন্ত্রী তাঁর বাজেট বক্তৃতায় বলেন, ‘আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণ তথা ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় প্রত্যক্ষ করকে রাজস্ব আদায়ের প্রধান খাতে পরিণত করার কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এতে করে নিকট ভবিষ্যতে সামগ্রিক অর্থনীতিতে একটি সমতার নীতি প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আশা করা যায়। সমতার নীতি বাস্তবায়নের প্রধানতম পদক্ষেপ হলো করভিত্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে আয়কর আইনের সার্বজনীন প্রয়োগ নিশ্চিতকরণ। এ লক্ষ্যে দেশের যে সকল উপজেলায় আয়কর দপ্তর নেই সে সকল উপজেলায় পর্যায়ক্রমে আয়কর দপ্তর স্থাপনের মাধ্যমে সারা দেশে আয়কর বিভাগের সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘২০১৪-১৫ অর্থবছরে আয়কর বাবদ সম্ভাব্য রাজস্ব আদায় হবে ৫০ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা, যা মোট এনবিআর রাজস্বের ৩৬.৫৮ শতাংশ। এই হারকে বিশেষ করে আমদানি শুল্কবিহীন ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে ব্যাপকভাবে বাড়াতে হবে। এবারের বাজেটে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির উদ্যোগের পাশাপাশি করের আওতা বৃদ্ধিকল্পে বহুবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করা, বিনিয়োগের অধিকতর সুযোগ সৃষ্টি করা ও কর প্রশাসনের গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়কর সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবসমূহ এখন আমি মহান জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করছি।’
ন্যূনতম কর
অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ‘বিদ্যমান আইনে সিটি করেপারেশন, জেলা সদরের পৌরসভা এবং অন্যান্য এলাকার কোম্পানি করদাতা ব্যতীত অন্য করদাতাদেরকে যথাক্রমে তিন হাজার, দৃই হাজার এবং এক হাজার টাকা ন্যূনতম কর পরিশোধ করতে হয়। আয়কর একটি সার্বজনীন কর যা বাংলাদেশে অঞ্চল নির্বিশেষে সমহারে প্রয়োগযোগ্য। ফলে বিদ্যমান অঞ্চলভিত্তিক ন্যূনতম কর হার প্রয়োগের পরিবর্তে এসকল করদাতাদের অঞ্চলভিত্তিক অবস্থান নির্বিশেষে ন্যূনতম করের হার চার হাজার টাকা করার প্রস্তাব করছি।’
কোম্পানি করদাতা ব্যতীত অন্যান্য করদাতাদের আয়ের করমুক্ত আয়ের সীমা এবং করহারের বিদ্যমান ও প্রস্তাবিত হার