‘পাটপণ্যের ওপর অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপে আমরা উদ্বিগ্ন’
‘যে সময় আমরা বিরাজমান অশুল্ক বাধাসমূহ দূরীকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, ওই সময়ে পাটপণ্যের ওপর অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করায় আমরা গভীর উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সকল ক্ষেত্রে বিদ্যমান পারস্পরিক সহযোগিতা ও ভাবমূর্তি বিরাজ করছে, এর সঙ্গে এ ধরনের পদক্ষেপ সঙ্গতিপূর্ণ নয়।’
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতির (এফবিসিসিআই) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ এ কথা বলেন। আজ সোমবার মতিঝিলের ফেডারেশন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ঘোষিত অর্ধবার্ষিক মুদ্রানীতি, বেসরকারি বিনিয়োগ পরিস্থিতি, ভারতে বাংলাদেশের পাটপণ্য রপ্তানিতে অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ এবং বর্তমান বাজেটে আরোপিত কাস্টমস ও ভ্যাট সম্পর্কিত বিষয়ের ওপর ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এফবিসিসিআই।
ঘোষিত মুদ্রানীতি সংক্রান্ত বিষয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘ভারত যেভাবে আমাদের পণ্যের ওপর শুল্ক মুক্ত করে দেয় অন্য কোনো দেশ সেভাবে দেয় না। অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্কে যে সমস্যা হচ্ছে, তার জন্য আমাদের একটু কষ্ট করতে হবে। আর আমাদের তাদের দেশের ব্যবসায়ী আইনগুলো ভালোভাবে জানতে হবে।’
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘ভারতে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ২৯ দশমিক ৬ শতাংশ হচ্ছে পাট ও পাটজাত পণ্য। ১৯ মার্কিন ডলার থেকে ৩৫১ মার্কিন ডলার পর্যন্ত অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করায় প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে পাটজাত পণ্য রপ্তানি করা সম্ভব হবে না। ফলে ভারতে বাংলাদেশের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি ভীষণ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।’
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্য ঘাটতি আরো বৃদ্ধি পাবে উল্লেখ্য করে মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘এতে করে উভয় দেশের ব্যবসায়ীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ কারণে এসব পণ্যের ব্যবহারকারী ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও এরই মধ্যে এ শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।’
মুদ্রানীতির সফল বাস্তবায়নের জন্য এফবিসিসিআই সভাপতি কয়েকটি প্রস্তাব করেন। এর মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশে উন্নীত করতে ডাবল ডিজিট জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে ৪০ শতাংশের ওপর জিডিপির বিনিয়োগ নিশ্চিত করার কথা জানান। সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে কর্মসংস্থান বাড়ানোর পরামর্শও দেন মাতলুব আহমাদ।
মাতলুব আহমাদ আরো বলেন, ‘অন্যদিকে বেসরকারি খাতের জন্য ঋণের জোগান ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে অন্তত ১৭ শতাংশ করা হলে আরো বিনিয়োগ সহায়ক হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতে (এসএমই) নারী উদ্যোক্তাসহ সবক্ষেত্রে সুদের হার ৯ শতাংশে নামিয়ে এনে ঋণ গ্রহণের সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহসভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সহসভাপতি মাহবুবুল আলম, পরিচালক শেখ ফজলে ফাহিম, দিলীপ কুমার আগারওয়ালা ও প্রবীর কুমার।