হুঁশিয়ারিতেও কমছে না পেঁয়াজের ঝাঁজ, সবজিতে স্বস্তি
দিনাজপুরের হিলিতে দীর্ঘদিন পর বাজারে সব ধরনের সবজির দামে ক্রেতাদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলেছে। কিন্তু লাগাম টানা যাচ্ছে না বাঙালির রসনা বিলাসের অন্যতম প্রয়োজনীয় উপাদান পেঁয়াজের। বার বার দাম কমাতে সরকারের নানা হুঁশিয়ারিকে কোনো তোয়াক্কাই করছেন না পেঁয়াজ মজুতদাররা। তাই নিত্যপণ্যটির দামের ছন্দপতনে নাকাল ক্রেতারা। বর্তমানে ৭০ টাকায় খুচরা বিক্রি হচ্ছে দেশি পেঁয়াজ।
বন্দরের বাংলাহিলি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, আলু ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, আদা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, রসুন ১০০ থেকে ১১০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, শুকনা মরিচ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, ফুলকপি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, বরবটি ৩০ টাকা, করলা ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, ঢেড়স ৩০ টাকা, লেবু হালি ৮ থেকে ১০ টাকা। প্রতিটি সবজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা কমেছে।
এছাড়া ধনেপাতা ২৬০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে এবং ডিম হালি প্রতি ৪০ থেকে ৪৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কমে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ভারতীয় জিরা।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক বাবলুর রহমান জানান, দুই মাসের বেশি সময় ভারত থেকে দেশে পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ রয়েছে। ফলে দেশি পেঁয়াজের বাজারে এই অবস্থা। সরকারের মন্ত্রীরা পেঁয়াজের বাজারে দামের অস্থিরতা কাটাতে ভারত থেকে আমদানি করার হুঁশিয়ারি দিলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। আবার আমদানিতে অনুমতিও দিচ্ছে না। তাই দ্রুত পেঁয়াজ আমদানিতে অনুমতির দাবি এই ব্যবসায়ীর।
আরেক পেঁয়াজ আমদানিকারক শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগে দেশে আমদানি করার জন্য সীমান্তের ওপারে পাঁচটি ট্রাকে পেঁয়াজ লোড করে রাখা হয়েছিল। আমার মতো অনেক ব্যবসায়ীই এনে মজুত করেছিল। কিন্তু আমদানির অনুমতি না পেয়ে সেখানে খালাস করে রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েক লাখ টাকার পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। সরকার আমদানিতে অনুমতি দিলেই ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে বাজার স্বাভাবিক রাখা হবে।’
হিলি বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের সুযোগ নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা দেশি পেঁয়াজের সংকট দেখিয়ে দাম বাড়াচ্ছে। ফলে ২৫ থেকে ৩০ টাকার পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা দরে। আবার কখনও ৮০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে।’
সকালে কাঁচা বাজারের ক্রেতা মহসীন আলী বলেন, ‘পেঁয়াজ ছাড়া বিভিন্ন সবজিতে দাম আগের চেয়ে কমেছে। এক মাসের মধ্যে সবজি বাজারে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া গেছে।’
সরকার দেশের কৃষকদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ১৬ মার্চ থেকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে অনুমতি (আইপি) বন্ধ রাখে। এরপর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।