ডলার বুকিং নিয়ে শঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের
ডলার বুকিংয়ের সুযোগ একটি নিয়মিত কার্যক্রম। ডলার সংকট যে আরও বাড়বে বিষয়টা এমন নয়। তাই এ বিষয়ে ভয় বা শঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আজ মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
এর আগে রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) ডলার বুকিং সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে আগাম ডলার নেওয়ার ক্ষেত্রে এক বছর পর সর্বোচ্চ দাম কী হবে তাও বেঁধে দেওয়া হয়। নতুন নিয়মে এক বছর পর ব্যাংক ডলারের দাম বর্তমানের চেয়ে স্মার্ট হারের সঙ্গে সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত বেশি নিতে পারবে।
ডলার বুকিংয়ের নির্দেশনায় জনমনে শঙ্কা সৃষ্টি হয়। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, আগামীতে ডলার সংকট আরও বাড়বে। এজন্য আগে থেকে ডলার বুকিং দিতে বলা হচ্ছে। অনেকে বলছেন, এক বছর পর ডলারের রেট ১২৩ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এমন সব তথ্য আর আলোচনা এখন সবার মুখে মুখে।
এমন পরিস্থিতিতে ডলার বুকিং নিয়ে শঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘ডলার বুকিং একটি নিয়মিত বিষয়। বড়বড় প্রতিষ্ঠান রপ্তানিমূল্য যথা সময়ে পরিশোধ করতে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। এর মানে ভবিষ্যতে ডলার সংকট আরও বাড়বে বিষয়টা এমন নয়। কমতেও পারে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
নতুন নিয়মে এক বছরের জন্য ডলার বুকিং দিয়ে রাখা যাবে। এজন্য গ্রাহককে অতিরিক্ত অর্থ দিতে হবে। এটা নির্ধারণ হবে এখন যে পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে ঋণের সুদহার নির্ধারিত হয়, তার মাধ্যমে। যেটা স্মার্ট বা সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল হিসেবে পরিচিত, সংক্ষেপে যার নাম ‘এসএমএআরটি’।
প্রতি মাসের শুরুতে স্মার্ট রেট জানিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। জুলাইয়ে স্মার্ট রেট ছিল সাত দশমিক ১০ শতাংশ। আগস্টে তা বেড়ে হয়েছে সাত দশমিক ১৪ শতাংশ, যা চলতি সেপ্টেম্বরেও অপরিবর্তিত রয়েছে। আগাম ডলারের দরের জন্য ‘এসএমএআরটি’ রেটের সঙ্গে আরও পাঁচ শতাংশ যোগ করতে হবে। অর্থাৎ ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ হবে।
এখন আমদানিতে ডলারের দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ আছে। কেউ যদি ভবিষ্যতের জন্য ডলারের বুকিং দিতে চান তাহলে তাকে এক বছর পর প্রতি ডলারে ১২৩ টাকার মতো পরিশোধ করতে হবে। আর মাসভিত্তিক দাম হলে তা মাস হিসেবেই কমে আসবে।
রেমিট্যান্স-রপ্তানি ডলারের এক রেট
রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে ডলারের মূল্য এখন থেকে এক রেটে ধরা হয়েছে। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ডলার প্রতি ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা পাচ্ছেন রপ্তানিকারকরা। আগে যা ছিল ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা। রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ে ডলারের মূল্য ৫০ পয়সা বাড়িয়ে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়েছে। এ ছাড়া আমদানিতে ডলারের দর হবে ১১০ টাকা। আগে যা ছিল ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আন্তব্যাংক ব্যবস্থায় ডলার লেনদেন হচ্ছে ১১০ টাকা ৫০ পয়সায়। তবে কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে নগদ এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের গুণতে হচ্ছে ১১৭ টাকা থেকে ১১৮ টাকা। চিকিৎসা, শিক্ষা বা ভ্রমণের জন্য যারা বিদেশে যাচ্ছেন, তাদের নগদে প্রতি ডলার কিনতে দেশি মুদ্রা খরচ করতে হচ্ছে সর্বোচ্চ ১১৮ টাকা পর্যন্ত।