কৃষকদের পুনঃঅর্থায়ন তহবিলে বড় গ্রাহকদের নজর
দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাঁচ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই তহবিল থেকে সর্বোচ্চ চার শতাংশ সুদে ঋণ পাচ্ছেন কৃষকরা। সহজ শর্তে স্বল্প সুদের এ ঋণের ওপর নজর পড়েছে বড় গ্রাহকদের। গবাদিপশুর খামারের নামে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়ে যাচ্ছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে প্রাণিসম্পদ খাতে গ্রাহকদের সর্বোচ্চ ঋণসীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে খামারিদের ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ দিতে পারবে না ব্যাংক। প্রকৃত ও প্রান্তিক কৃষিকের ঋণ সুবিধা নিশ্চিত করতে এ সীমা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গতকাল মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ। দেশের ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের (সিইও) কাছে পাঠানো এ সার্কুলারে বলা হয়, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষি খাতে স্বল্প সুদ হারে ঋণ প্রবাহ বজায় রাখার জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার একটি স্কিম গঠন করা হয়েছে। পুনঃঅর্থায়ন স্কিম থেকে ইতোমধ্যে প্রাণিসম্পদ খাতে কিছু কিছু ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের ঋণ দেওয়া হয়েছে। এতে করে প্রকৃত ও প্রান্তিক কৃষক ঋণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ অবস্থায় প্রাণিসম্পদ খাতে একজন খামারিকে সর্বোচ্চ ঋষ সীমা ২০ লাখ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এই সার্কুলারে আগের নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গত বছরের ১৭ নভেম্বর দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষি খাতের জন্য পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করা হয়। যার আকার পাঁচ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব অর্থায়নে গঠিত এ স্কিমটির মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগের সঙ্গে একটি অংশগ্রহণ চুক্তির মাধ্যমে এই সুবিধা নিতে পারবে কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালার আওতাভুক্ত ব্যাংকগুলো। এসব ব্যাংকগুলোর চাহিদা, কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা, ঋণ বিতরণের সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে তহবিল বরাদ্দ করবে কৃষি ঋণ বিভাগ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে দশমিক ৫০ শতাংশ সুদে অর্থ নিয়ে কৃষক পর্যায়ে সর্বোচ্চ চার শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করবে ব্যাংকগুলো। প্রয়োজন বোধে বরাদ্দ দেওয়া তহবিলের পরিমাণ পুনর্নির্ধারণ করতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সার্কুলারে আরও বলা হয়, এই তহবিলের অধীনে ব্যাংকগুলো নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করবে। ক্ষুদ্র, প্রান্তিক, বর্গাচাষি ও ফসল (ধান, শাক-সবজি, ফুল ও ফল) চাষের জন্য সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করতে পারবে ব্যাংকগুলো। ঋণ পরিশোধে কৃষক বা গ্রাহক তিন মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১৮ মাস সময় পাবেন। এই তহবিলের ঋণ কোনোভাবেই গ্রাহকের পুরোনো ঋণের সঙ্গে সমন্বয় করা যাবে না।