বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিল দারাজ
সাম্প্রতিক সময়ের ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। বিশেষ করে, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে বন্যা পরবর্তী সহায়তা এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসনে সহায়তা করার লক্ষ্য নিয়ে পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র, অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশন এবং মিশন সেভ বাংলাদেশ এই তিনটি এনজিও’র সাথে একযোগে কাজ করছে দেশের বৃহত্তম অনলাইন মার্কেটপ্লেস দারাজ বাংলাদেশ।
দারাজের এই উদ্যোগ তাদের চলমান বন্যা ত্রাণ কার্যক্রমের অংশ। এর আগে আগস্টের শুরুতে যখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা আঘাত হানে, দারাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে এর কর্মী এবং সাংগঠনিক সহায়তার মাধ্যমে এক কোটি টাকার ত্রাণ তহবিল গঠন করে। এই উদ্যোগের প্রথম পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের কাছে প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য ও অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতে মিশন সেভ বাংলাদেশ- এর সাথে অংশীদারত্ব করে।
এই চলমান অংশীদারত্বের আওতায় পদক্ষেপ এবং অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশন নামক আরও দু’টি এনজিও’র সাথে কাজ করছে দারাজ। এই সহযোগিতার আওতায়, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে টেকসই আয়ের উৎস হিসেবে ১০০টি ছাগল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া, কুমিল্লা সদর, বুড়িচং, চৌদ্দগ্রাম, ফেনী সদর, ছাগলনাইয়া, পরশুরাম, দাগনভুইয়া, সোনাগাজী এবং কবিরহাট সহ তিন জেলার অধীনে প্রায় ১১টি উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষের কাছে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে পৌঁছে যায় দারাজ। এই ত্রাণসামগ্রী দিয়ে বন্যা কবলিত মানুষরা কমপক্ষে ১৫ দিন তাদের প্রয়োজন মেটাতে পারবেন।
এছাড়াও দেশের উত্তরাঞ্চলে নতুন করে বন্যার প্রাদুর্ভাব ঘটায় দারাজ পুনরায় মিশন সেভ বাংলাদেশের সহায়তায় শেরপুর, লালমনিরহাট এবং কুড়িগ্রামের প্রায় ১০ হাজার বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছে।
ফেনীর চর চান্দিয়া এলাকার বন্যা কবলিত রাবেয়া আক্তার অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে দারাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “আকস্মিক বন্যায় ভেসে গেছে আমাদের সব স্বপ্ন। দারাজের পক্ষ থেকে আমাদেরকে একটি ছাগল উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে। আমরা তাঁদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ, কারণ এই কঠিন সময়ে এই সহায়তা আমাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন হিসেবে কাজ করবে।”
দারাজ বাংলাদেশের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার এ এইচ এম হাসিনুল কুদ্দুস (রুশো) বলেন, “একটি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা যতটা সম্ভব আমাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রেখে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জীবিকা পুনর্গঠনে মনোযোগ দিচ্ছি। আমাদের সহকর্মী এবং এনজিও অংশীদারদের প্রতি আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই, যারা এই মহৎ উদ্যোগকে সম্ভব করেছেন। সম্মিলিতভাবে আমরা বন্যার্তদের পুনর্বাসনে কাজ করে যাচ্ছি।”
এনজিও অংশীদাররা বন্যাকালীন সময়ে সময়োপযোগী উদ্যোগ এবং দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসনে সহায়তা করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দারাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জীবন পুনর্গঠনে প্রানিসম্পদ (ছাগল) আয়ের উৎসে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এছাড়া, জরুরি ত্রাণ সহায়তা বন্যার্তদের কষ্ট লাঘবে ভূমিকা রেখেছে। অংশীদাররা সংকটের সময় সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার গুরুত্বও তুলে ধরেন।
ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের মাধ্যমে ভুক্তভোগী মানুষের পাশে থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ দারাজ। দেশের সংকট উত্তরণ এবং পুনর্নির্মাণে নিজেদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে এই প্রতিষ্ঠানটি।