ইডেনে সাংবাদিক প্রবেশ করানোর অভিযোগে ছাত্রলীগ নেত্রীকে শোকজ
রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও সংঘর্ষের ঘটনার সময় ক্যাম্পাসে সাংবাদিক প্রবেশ করানোর অভিযোগে কলেজ ছাত্রলীগের নেত্রী সুস্মিতা বাড়ৈকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে শহীদ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাস প্রশাসন। ছাত্রলীগ নেত্রী সুস্মিতা বাড়ৈ, ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সদ্য স্থগিত কমিটির সহসভাপতি ছিলেন।
ইডেন মহিলা কলেজের শহীদ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাসের তত্ত্বাবধায়ক নাজমুন নাহারের সই করা নোটিশে বলা হয়েছে, কলেজে গত ২৪ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে ও ২৫ সেপ্টেম্বর সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা তদন্তের জন্য গঠিত কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার হলের সিট কেন বাতিল করা হবে না, তার সন্তোষজনক লিখিত জবাব হল কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিলের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
তদন্ত কমিটির অভিযোগগুলো হলো—
ক. ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে কলেজের ২নং মূল গেটের তালা জোরপূর্বক খুলে কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই সাংবাদিকদের কলেজে প্রবেশ করিয়েছেন।
খ. ২৫ সেপ্টেম্বর ২নং ও ৩নং গেট দিয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া সাংবাদিক কলেজে প্রবেশ করিয়েছেন।
গ. একই দিন হল থেকে ছাত্রীদের বের হতে বাধা প্রদান করেছেন।
ঘ. হলের দারোয়ানের কাছ থেকে চাবির গোছা নিয়ে ফেলে দিয়েছেন।
ঙ. ছাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, তাদের মোবাইল কেড়ে নিয়েছেন।
এসব বিষয়ে রোববার দুপুর ১২টার মধ্যে লিখিত জবাব জমা দেওয়ার নির্দেশনাও এতে দেওয়া হয়েছে।
গত ২২ সেপ্টেম্বর ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রীভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে ‘সিট বাণিজ্য ও চাঁদাবাজির’ অভিযোগ এনে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেন সংগঠনটির সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস। এ কারণে তাকে ছাত্রীনিবাসের একটি কক্ষে আটকে রেখে মারধর করার অভিযোগ ওঠে।
এ ঘটনায় মধ্যরাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের একাংশের বিক্ষোভে ইডেন কলেজ ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা রীভা ও রাজিয়ার বহিষ্কারের দাবি জানান। পরে রোববার দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ আসে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে।
তদন্ত কমিটির প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে গত ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিরোধী পক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। পরে বিকেলে সভাপতি রিভা সংবাদ সম্মেলন করতে এলে আবারও সংঘর্ষে জড়ায় দুইপক্ষ। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কলেজ ছাত্রলীগের সব সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।