এবার বদরুন্নেসার ছাত্রলীগনেত্রীর বিরুদ্ধে নির্যাতন ও রুম দখলের অভিযোগ
রাজধানীর বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আক্তার সাইমুনের বিরুদ্ধে আবাসিক হলের এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতন ও তার রুম দখলের অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার (৪ মার্চ) দিনগত রাত ১২টার দিকে হলের দ্বিতীয় তলার ২০০৭ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ছাত্রী ওই কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী।
ফাতেমা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভুক্তভোগী কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক হাবিবার সঙ্গে দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছেন। তবে গত কয়েক মাসের বেশি সময় ধরে তাদের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। এর রেশ ধরে তিনি গত বৃহস্পতিবার হাবিবার জন্মদিনের আয়োজনে অংশ নেননি। এ ছাড়া ছাত্রলীগনেত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে হলে থাকা ছাত্রীদের সবার কাছ থেকে ২০ টাকা করে চাঁদা তোলা হয়। ভুক্তভোগী এই চাঁদাও দেননি। এতে ক্ষুব্ধ হন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবা।
অভিযোগ বলছে, এ ঘটনার সূত্র ধরে শনিবার রাতে ভুক্তভোগীর কক্ষে নিজের অনুসারীদের দিয়ে ভাঙচুর চালান হাবিবা। কক্ষের জিনিসপত্র বাইরে ফেলে দেন তারা। এ সময় ভুক্তভোগীর মুঠোফোন কেড়ে নেওয়া হয় এবং তাকে মারধর করা হয়।
নতুন হোস্টেলের ওই কক্ষে ভুক্তভোগীসহ ১৪ জন থাকেন। ভাঙচুর ও মারধরের সময় ওই কক্ষ থেকে তাকে ছাড়া অন্যদের বের করে দেওয়া হয়। কক্ষ ভাঙচুর ও ছাত্রীদের হল থেকে বের করে দেওয়ার সময় এক শিক্ষার্থী এগুলো মুঠোফোনে ভিডিও করেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমি হাবিবার জন্মদিনের আয়োজনে চাঁদা দেইনি। কেক কাটার সময় যাইনি। বিষয়টি কেউ একজন ফেসবুকে পোস্ট করেন। ওই পোস্ট নাকি আমরা করিয়েছি, এজন্য আমার ওপর জুলুম করা হয়েছে।’
ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই রুম দখলের জন্য কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবা চেষ্টা করে আসছিলেন। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার বাদানুবাদও হয়েছে। এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় শনিবার দিনগত রাতে জোর করে তার পছন্দের শিক্ষার্থীদের এই কক্ষে উঠিয়ে দিয়ে অন্যদের কক্ষ পরিবর্তন করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। আমি তার কথা মতো কক্ষ পরিবর্তন করতে না চাইলে নির্যাতন করে জোর করে বিছানাপত্র ফেলে দেওয়া হয়।’
ভুক্তভোগী আরও বলেন, ‘এমন ঘটনায় মানসিকভাবে আমি ভেঙে পড়েছি। বিষয়গুলো আগেই কলেজ প্রশাসনকে জানিয়েছি। যেখানেই কলেজের প্রশাসন রোববার এ বিষয়টি নিয়ে বসবেন। তার আগেই তিনি (হাবিবা আক্তার সাইমুন) তার অনুসারীদের দিয়ে জোরপূর্বক এমন কাজ করেছেন। শেষ পর্যন্ত তারা ওই কক্ষটি দখল করেই নিয়েছেন।’
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আক্তার সাইমুন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘তেমন কিছুই হয়নি। লাইজু আমারই হলের ছোট বোন। তার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। ছাত্রলীগে সাধারণ সম্পাদক ইনান ভাই সমাধান করে দিয়েছেন।’
এসব বিষয়ে কথা হয় বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সেলিনা আক্তার শেলীর সঙ্গে। তিনি জানান, ছাত্রলীগের একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য ময়মনসিংহে অবস্থান করছেন। কলেজে কী হচ্ছে তা জানেন না। তবে, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন এবং সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছেন।
বেগম বদরুন্নেসা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিকুন্নাহার বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি আমরা বিষয়টি দেখব। এ বিষয়ে কলেজ প্রশাসন বসে সিদ্ধান্ত নেবে।’