খুবির নতুন উপাচার্য অধ্যাপক মাহমুদ হোসেন
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ১৯৯০-এর (১১)১ ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ চার বছর মেয়াদে তাঁকে উপাচার্য হিসেবে নিযুক্ত করেছেন। আজ সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ জারি করা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. মাহমুদুল আলম স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে (নং-শিম/শাঃ১৮/৮খুঃবিঃ১/৯৭(অংশ-১)/১৬৪) স্মারকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি হলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম উপাচার্য এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে নিযুক্ত দ্বিতীয় উপাচার্য। তিনি আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন বলে রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১তম উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামানের মেয়াদ গত ২৮ জানুয়ারি শেষ হয়। এ হিসেবে প্রায় চার মাস পর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পেল নতুন উপাচার্য।
এদিকে খুবির নবনিযুক্ত উপাচার্য সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, খ্যাতনামা গবেষক শিক্ষক খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন ১৯৭২ সালের ২২ আগস্ট বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার মধ্য কচুবুনিয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৭ সালে এসএসসি, বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজ থেকে ১৯৮৯ সালে এইচএসসি, ১৯৯৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স থেকে বনবিদ্যায় স্নাতক (সম্মান), ১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ার পুত্রা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যানগ্রোভ ইকোলজির ওপর স্নাতকোত্তর এবং ২০০৪ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ের ওপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯৯ সালে মাহমুদ হোসেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। ২০০১ সালে তিনি সহকারী অধ্যাপক, ২০০৫ সালে সহযোগী অধ্যাপক এবং ২০০৯ সাল থেকে ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনে অদ্যাবদি অধ্যাপক পদে দায়িত্বরত আছেন। তাঁর ১০৫টি গবেষণা নিবন্ধ আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত পুস্তকের সংখ্যা তিনটি, অনুবাদ দুটি। দেশি ও বিদেশি সংস্থার অর্থায়নে ২৬টি গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন তিনি। তাঁর উদ্যোগ ও নেতৃত্বে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের মধ্যে প্রথম সয়েল আর্কাইভ স্থাপন হয়েছে। প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য, ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড ডিসিপ্লিনের বিভাগীয় প্রধান, বোর্ড অব অ্যাডভান্স স্ট্যাডিজের সদস্য, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সহ-সভাপতিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।
অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ সাবেক সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মোজাম্মেল হোসেন ও সাবেক প্রধান শিক্ষিকা জাহানারা বেগমের একমাত্র ছেলে। তাঁর বাবা-মা গত কয়েক বছরের ব্যবধানে ইন্তেকাল করেন। তাঁর সহধর্মিনী ইসমত আরা শিরীন চৌধুরী একজন গৃহিণী। তাঁরা এক সন্তানের জনক-জননী। তাঁদের একমাত্র মেয়ে তাসফিয়াহ মাহমুদ খুলনার সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজের শিক্ষার্থী।