খুলতে শুরু করেছে বাকৃবি’র হলগুলো, দেড় বছর পর ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা
প্রায় দেড় বছর পর ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ফিরতে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। হলে ওঠার সুযোগ পেয়েছেন দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। আগামীকাল সোমবার থেকে অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হবে। তাঁদের জন্য গত শুক্রবার থেকে হল খুলে দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ১৩টি হল রয়েছে। এর মধ্যে চারটি নারী শিক্ষার্থীদের জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক শিক্ষার্থী প্রায় ছয় হাজার।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. এ কে এম জাকির হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
জাকির হোসেন আরও জানান, প্রথম থেকে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য আগামী ৩ অক্টোবর থেকে হল খুলে দেওয়া হবে। ১৭ অক্টোবর থেকে তাঁদের সেমিস্টার চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হবে।
ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা আরও বলেন, যারা টিকা নিয়েছেন, তাঁদের হলে ওঠার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে এবং হবে। শিক্ষার্থীদের মাস্ক পরা, দলবেঁধে ঘোরাঘুরি না করা এবং সময় মতো লাইনে দাঁড়িয়ে খাবার নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোনো কোনো হলে প্রভোস্টরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করেছেন।
অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স চতুর্থ বর্ষ এবং মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের জন্য আজ রোববার খুলে দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার। এ ছাড়া আগামী ৫ অক্টোবর আবাসিক হল খুলে দেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে গত ১৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি ও একাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভা শেষে জানানো হয়, অনার্স চতুর্থ বর্ষ এবং মাস্টার্সের যেসব শিক্ষার্থী কোভিড-১৯-এর অন্তত প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন, তাঁরা স্বাস্থ্যবিধি এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া অনুসরণ করে গ্রন্থাগার ব্যবহার এবং নিজ নিজ হলে উঠতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই শিক্ষার্থীদের টিকা গ্রহণের কার্ড/সনদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ পরিচয়পত্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দেখাতে হবে।
শিক্ষার্থীরা আজ রোববার থেকে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, বিজ্ঞান গ্রন্থাগার ও বিভাগীয়/ইনস্টিটিউটের সেমিনার লাইব্রেরি ব্যবহার করতে পারবেন।
অপরদিকে, আবাসিক শিক্ষার্থীরা আগামী ৫ অক্টোবর সকাল ৮টা থেকে নিজ নিজ হলে উঠতে পারবেন। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তা/কর্মচারীদেরও টিকা গ্রহণের সনদ/প্রমাণপত্র সঙ্গে রাখতে হবে।
সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি আবাসিক হল ও অ্যাকাডেমিক ভবনের দৃশ্যমান জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের নির্দেশিকা সম্বলিত ব্যানার/ফেস্টুন থাকবে।
টিকা গ্রহণ সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে অনার্স প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য নিজ নিজ আবাসিক হল খুলে দেওয়া হবে। আবাসিক হলগুলোতে আগের মতো ঠাসাঠাসি করে বসবাস করা এবং কথিত ‘গণরুম’ রাখা যাবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধু নিয়মিত আবাসিক শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করবেন। সভায় হল ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শতভাগ শিক্ষার্থী টিকা কার্যক্রমের আওতায় আসার পর সশরীরে শ্রেণি কার্যক্রমের তারিখ নির্ধারণ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টারে টিকা প্রদান কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেসব শিক্ষার্থী এখনও টিকার জন্য নিবন্ধন করেননি, তাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিবন্ধনের আওতায় এসে টিকা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।